Pandemic

রাজনীতির কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি !

তবে বিধি মেনে নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে তাঁদের সব কর্মসূচি অন্দরেই হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৪৩
Share:

প্রতীকী চিত্র

এপ্রিলের গোড়ায় না হলেও প্রথম লকডাউনের মাস ছয়েকের মধ্যে জেলায় করোনা সংক্রমণ পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। করোনায় মৃত্যুও হয়েছে জেলার এক ব্লক আধিকারিক সহ পঞ্চাশের বেশি মানুষের। পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসনের একের পর এক কর্মী, আধিকারিক করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় প্রতিদিন। বাদ যাননি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাও।

Advertisement

কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো কি এই পরিস্থিতিতে নিজেদের ভূমিকা ঠিক মতো পালন করছে? এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, “রাজনৈতিক দলগুলি অতিমারির কালে ভুলেছে নিজেদের ভূমিকা।” দলে যোগদান থেকে বিভিন্ন জায়গায় নিত্যদিন স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি নিচ্ছেন প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল। আর সেখানে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে ভিড় উপছে পড়ছে মানুষের।

এই অবস্থায় প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলি মানুষকে সচেতন করতে রাস্তায় নামার দাবি তুলছেন জেলাবাসীরা। বহরমপুরের বাসিন্দা সুব্রত পাল বলেন, “নিজেদের অনুষ্ঠানেই যদি নেতারা কর্মীদের বিধি মানতে বাধ্য না করেন, তা হলে অন্যত্র মানুষ সে কথা মানবেন কেন?” তিনি বলেন, “সমাজের যে কোন কাজে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এদের অতিমারি ঠেকাতে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।” সে কথা অবশ্য মুখে অস্বীকার করছেন না কোন নেতাই। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, “মানুষকে নিয়েই আমাদের কাজ। মানুষকে সতর্ক করছি নিষেধ করছি বারংবার। তবু তাদের আবেগের কাছে স্বাস্থ্যবিধি মানা যাচ্ছে না। সামনেই ভোট। ভোট তো আর ভার্চুয়ালি হবে না। তাই মানুষের কাছে যেতেই হবে আমাদের নানান কর্মসূচি নিয়ে।”

Advertisement

তবে বিধি মেনে নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে তাঁদের সব কর্মসূচি অন্দরেই হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা বিজেপি। বিজেপি জেলা সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ বলেন, “সংক্রমণ এড়াতে জেলায় একমাত্র আমরাই মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের ব্যবস্থা করে দলীয় কার্যালয়ে কিংবা অন্য কোথাও সেই কর্মসূচি পালন করছি। পাশাপাশি মানুষকে সতর্কও করছি।” কংগ্রেসের এসএসটি সেলের উদ্যোগে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার ও বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন দেয় কংগ্রেস। সেখানে বিধি ভেঙে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের ভিড় উপছে পড়েছিল। ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহফুজ আলম ডালিম বলেন, “দুই সরকারের কার্যকলাপে মানুষ অতিষ্ঠ। তাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। ফলে তাঁরা কংগ্রেসকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে। তাঁদের আবেগের কাছে হার মানছে বিধি।” করোনা ঠেকাতে রাজনৈতিক দলগুলির এই অপারগতায় দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্য, পুলিশ এমনকি সাধারণ প্রশাসনও।

স্বাস্থ্য আধিকারিকরা অবশ্য করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য মানুষ জনের বেপরোয়া মনোভাবকেই দায়ী করেছেন। ইতিমধ্যে বিধি মেনে দুর্গা পুজোর আয়োজন করার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। নতুন জামাকাপড় কিনতে সদর শহরের দোকানগুলোতে প্রতিদিন দু-বেলা ভিড় বাড়ছে মানুষের। এ দিকে আঁটোসাঁটো লকডাউনের পর আনলক পাঁচ শুরুর মুখে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলাবাসীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন