‘রেফার’ না করে নতুন নজির জেএনএম হাসপাতালে

‘রেফার’ না করে কলকাতা থেকে চিকিৎসক এনে অস্ত্রোপচার জেএনএম হাসপাতালে

চলতি মাসের চার তারিখে চাকদহের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের ইন্দ্রানী দাসকে জেএনএমের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক মৃগাঙ্ক মৌলি সাহার অধীনে তিনি ভর্তি হন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩০
Share:

অস্ত্রোপচারের পরে। শুক্রবার জেএনএম-এ। নিজস্ব চিত্র

জেলার হাসপাতালগুলি যখন রোগীকে রেফার করতে পারলেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, তখন তার বিপরীত পথে হাঁটল কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, প্লাস্টিক সার্জারির ব্যবস্থা এই হাসপাতালে না থাকায় কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতাল থেকে একজন সার্জেনকে নিয়ে এসে জেএনএমেই এক মহিলার অস্ত্রোপচার করলেন চিকিৎসকেরা।
চলতি মাসের চার তারিখে চাকদহের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের ইন্দ্রানী দাসকে জেএনএমের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক মৃগাঙ্ক মৌলি সাহার অধীনে তিনি ভর্তি হন। পরীক্ষানিরীক্ষার পর দেখা যায়, মহিলার যোনি-দ্বারে একটি টিউমার রয়েছে। পরবর্তীতে বায়োপসি পরীক্ষার পর দেখা যায়, টিউমারটিতে রয়েছে ক্যানসারের জীবাণু। এর পর চিকিৎসকেরা রোগীর যোনিদ্বার কেটে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, পাছে জীবাণু শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে না পড়ে। সেই মতো শুক্রবার মৃগাঙ্ক ও অ্যানাস্টেটিস্থ নবারুণ সরকারের নেতৃত্বে ওই মহিলার টিউমারটি কেটে বাদ দেওয়া হয়।
কিন্তু এর পরই চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, ওই মহিলার যোনিদ্বার প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে। কিন্তু এই হাসপাতালে সেই বিভাগ নেই। তখন বিকল্প উপায় ভাবা শুরু হয়।
চিকিৎসক মৃগাঙ্ক জানান, আগে তিনি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ছিলেন। সেখানে কাজ করার সূত্রে পূর্ব-পরিচিত সহকর্মী প্লাস্টিক সার্জেন দেবাশিস বৈতালিকের কথা মাথায় আসে তাঁর। সেই মতো কথাও বলেন। দেবাশিস তাঁকে জানান, রোগীকে অহেতুক রেফার করার প্রয়োজন নেই। তিনি নিজেই জেএনএমে গিয়ে যোনিদ্বারের প্লাস্টিক সার্জারি করবেন। সেই মতো এ দিন তিনি রোগীর ওই সার্জারি করেন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে লেগে যায় পাঁচ ঘণ্টা। মৃগাঙ্কের দাবি, গরিব মানুষকে কলকাতায় রেফার করে অকারণ হয়রানি করতে চাননি তিনি। তাই অন্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক এনে জেএনএমে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত। এর ফলে ওই রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনও প্রভাব পড়বে না।
এ দিন অস্ত্রোপচারের পর রোগীর দেওর সমীর দাস বলেন, ‘‘কোনওরকমে দিনমজুরি করে দিন চলে আমাদের। এখানকার চিকিৎসকেরা যে ভাবে কলকাতায় না পাঠিয়ে এখানেই বৌদিকে সুস্থ করে তুললেন, ভাবা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন