তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও কেন লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরীকে পদে ফেরানো হল না, সেই প্রশ্ন তুলে সভা করলেন তাঁর অনুগামীরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন জেলা ও রাজ্য নেতারা। তার কারণ তৃণমূলের ঘাঁটি বলে পরিচিত এই ব্লকে বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীদের অপেক্ষাকৃত ভাল ফল করে। ভোটের পরেই তাঁকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ওই ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১২টি আসনের মধ্যে মাত্র ৪৬টিতে জিতেছিল তৃণমূল। বিজেপি সেখানে পায় ২২টি, নির্দল জিতেছে ১৪ জন। বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গেও লক্ষ্মণের সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকে। সব মিলিয়ে পদচ্যুত হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি কৃষ্ণনগরের সার্কিট হাউসে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁকে সরানোর জন্য ধমক খেতে হয় সত্যজিৎকে। নেত্রী নির্দেশ দেন, অবিলম্বে যেন লক্ষ্মণকে আবার সভাপতি করা হয়।
এর পরেই নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন লক্ষ্মণ-অনুগামীরা। আসন্ন ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে মঙ্গলবার ভাজনঘাটের একটি মাঠে বৈঠক ডাকেন মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতারা। সেখানে হাজির হন ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তের লক্ষ্মণ-অনুগামী নেতাকর্মীরা। তাকে অবিলম্বে সভাপতি করার জন্য দাবি ওঠে। তালদহ-মাজদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অনুপ দাস থেকে শুরু করে অন্য অনেক বক্তাই নেত্রীর নির্দেশ মেনে লক্ষ্মণকে অবিলম্বে পদ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন।
তৃণমূলের দুর্দিনে, ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ব্লক সভাপতি ছিলেন লক্ষ্মণ। আবার ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্তও তিনি ব্লক সভাপতি থাকেন। পদ থেকে সরলেও দলে অনুগামীর সংখ্যা তাঁর কম নয়। লক্ষ্মণ বলছেন, “নেত্রী সব কিছু বুঝে খোঁজ নিয়েই আমাকে আবার সভাপতি কররার নির্দেশ দিয়েছেন। এখন দল যা করার সেটা করবে। আমি পদের জন্য দল করিনি কখনও, আজও করব না।”
বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, “কী কারণে ওই সভা করা হয়েছে, জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।’’ দলীয় সূত্রের খবর, লক্ষ্মণকে যাতে আবার সভাপতি করা না হয় তার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে দলেরই একটি অংশ। গৌরীশঙ্কর শুধু বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতির বিষয়টা স্বয়ং নেত্রী দেখছেন। সেখানে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”