মুর্শিদাবাদ জেলায় যে কোনও ভোট মানেই রক্তপাত, খুন, বোমাবাজি। জেলার সেই চেনা চেহারাটা বদলে দিতে, এ বার কড়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন। কারা কোন এলাকায় গন্ডগোল পাকাতে পারে, সেই তালিকা তৈরি করে জেলা পুলিশকে ভোটের অনেক আগে থাকতেই কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্দেশ পেয়ে ইতিমধ্যে জেলাশাসক-সহ বিভিন্ন পুলিশ আধিকারিকেরা উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় ছুটছেন, ভোটারদের অভয় দিচ্ছেন। শনিবার থেকেই জেলাশাসক পি উলাগানাথন মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জের বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধকবাগ, দেবীপুর ও জিয়াগঞ্জের সদরঘাট এলাকায় ভোটারদের অভয় দেন, এ ছাড়াও রবিবার তিনি ডোমকলের জুড়ানপুর, বগারপুর রমনা গ্রামগুলিতে গ্রামবাসীদের কাছে জানতে চান, “এই সব এলাকায় তো আগে ভোট এলেই গণ্ডগোল হত, এ বারেও কি সে সব হবে?’’ জেলাশাসকের প্রশ্নে, বাহাদুরপুরের এক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে ভোটের আগের দিন ভোট দিতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছিল, এ বার কি হবে জানি না স্যার!’’
জেলাশাসক তাঁকে অভয় দিয়ে এসেছেন, ‘‘আগে কি হয়েছে ভুলে যান। এ বার আমরা আছি। জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব।” যা শুনে মানুষটি বিড়বিড় করতে থাকেন, বিরোধীরা যা শুনে বলছেন, ‘‘তা হলে আগের বার ব্যবস্তা নিলেন না কেন স্যার!’’
তবে শুধু জেলাশাসক একা নন, জেলা পুলিশ সুপার-সহ বিভিন্ন আধিকারিকেরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখছেন ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে অভয় দিচ্ছেন। সোমবার মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের নির্বাচনী অফিসার ও অতিরিক্ত জেলাশাসক ভূমি ও ভুমিসংস্কার অংশুল গুপ্ত ডাঙাপাড়া পরিদর্শন করেন।
জেলাপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৫৭০৬ টি বুথের মধ্যে ৬৮০টি উত্তেজনাপ্রবণ বলে চিহ্নিত করেছে। ওই সব এলাকায় জেলা জুড়ে ১৭১১ জন গণ্ডগোল পাকাতে পারে বলে একটি তালিকা করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার জানান।
পুলিশ সুপার বলেন “২০১৯ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত ২৩৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৬৪টি কার্তুজ ও ১২৮টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। ১২৮ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”