‘দিদি’র ঐক্য বার্তার পরে

হাত ধরো, কিন্তু কে ধরবে

দলনেত্রী উড়ে যাওয়ার পরে যে যার ঠিকানায় ফিরে গেলেও কথাটা ক’দিন ধরেই দলের অন্দরে ঘুরপাক খাচ্ছে— ঠিক কার দিকে আঙুল তুললেন দিদি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

ধুমারপাহাড় থেকে বাহালনগর, শেষ বিকেলে বহরমপুর— রাতটা সার্কিট হাউসে কাটিয়ে পরের সকালেই কলকাতা পাড়ি। বুধবার চব্বিশ ঘণ্টার মুর্শিদাবাদ সফর শেষে, ফিরে যাওয়ার আগে, চাক বাঁধা জেলা নেতাদের তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ ছিল— ঐক্যবদ্ধ থাকুন, অহঙ্কার ঝেড়ে সাধারনের সঙ্গে মেলামেশাটা বাড়ান। তা হলেই দলের ভাল হবে। মনে থাকে যেন কথাটা!’’

Advertisement

দলনেত্রী উড়ে যাওয়ার পরে যে যার ঠিকানায় ফিরে গেলেও কথাটা ক’দিন ধরেই দলের অন্দরে ঘুরপাক খাচ্ছে— ঠিক কার দিকে আঙুল তুললেন দিদি?

দলের এক পুরনো নেতা, নতুনের ভিড়ে যাঁকে এখন আর তেমন প্রভাবশালী মনে হয় না, বলছেন, ‘‘এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি আমরা যে সহজ কথারও বাঁকা মানে করি। নিজের দোষ না দেখে কার দিকে আঙুল তললেন নেত্রী সেই আলাচনায় পরস্পরের দিকে বাঁকা

Advertisement

চোখে তাকাচ্ছি।’’

কংগ্রেসের শক্ত হাত আবু তাহের খান এখন জেলার অন্যতম সর্বেসর্বা। তিনি মনে করছেন, ‘‘দেখুন, বহরমপুরে এনআরসি বিরোধী সভা সফল করার পরে বাহালনগরে প্রশাসনিক সভায় মানুষের ভিড় দেখে দিদি খুশি হয়েছেন। বুঝেছেন মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। বুঝেছেন যে আমি সবাইকে নিয়ে দল করার চেষ্টা করছি।’’ নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ধরে রাখতে বলছেন, ‘‘দলের মধ্যে যাঁদের পায়ের তলায় মাটি নেই, তাঁরা বিরোধিতা করছেন জানি, আমি সে সবে গুরুত্ব দিই না, পাত্তাও দিই না। তবে আমি কোনও দলাদলিতে নেই।’’

সদ্য কংগ্রেস থেকে দলবদল করেই সাংসদ এবং জেলা সভাপতি হয়ে যাওয়া তাহেরের সঙ্গে জেলা পরিষদ সভাপতি মোশারফ হোসেনের সম্পর্ক যে বেশ ‘মধুর’, দলের সকলেই তা জানেন! তিনি বলছেন, ‘‘দিদির কথার কি ব্যাখ্যা জেলা সভাপতি দিচ্ছেন তাতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমি বুঝি, দলটা বড় হয়েছে। অনেক নেতাও এসেছে। সবাইকে নিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন দিদি। সেটা মানার চেষ্টা করব।’’

সংগঠনে যে একটা ফাঁক রয়ে গিয়েছে তা বোঝেন সকলেই। জেলা মুখপাত্র অশোক দাসও তাঁর ব্যতিক্রম নন। বলছেন, ‘‘সেই ফাঁকটাই যাতে না থাকে সেটার কথাই বলে গিয়েছেন দিদি। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’ যা শুনে জেলার এক সাংসদ হাসছেন, ‘‘তার মানে ফাঁক যে আছে তা

তো স্পষ্ট!’’

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেনও সেই সুরেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘দলীয় কার্যালয়ে বসে এক শ্রেণির নেতা গোষ্ঠী তৈরি করছেন, তাঁদের কাছেই দিদির এই সতর্কবার্তা।’’

যা শুনে সেই পুরনো নেতা বলছেন, ‘‘বুঝতে পারছেন তো ঐক্যবদ্ধ হওয়া কেন জরুরি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন