আজ মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি

ধমকের ভয়ে কাঁটা কর্তারা

হঠাৎ জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। তাও দু’দিনের নোটিসে। শশব্যস্ত অফিসারেরা। কেউ-কেউ আবার একটু সিঁটিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০২:০৯
Share:

বন্দি: মোবাইলে ধরা রইল মমতার কপ্টার। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

হঠাৎ জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। তাও দু’দিনের নোটিসে। শশব্যস্ত অফিসারেরা। কেউ-কেউ আবার একটু সিঁটিয়েও।

Advertisement

সকলেই জানে, আজ, শুক্রবার প্রশাসনিক বৈঠকে নানা দফতরের কাজ খুঁটিয়ে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কোপ যে কার ঘাড়ে নামবে, তা আগে থেকে আঁচ করা মুশকিল।

ফলে, যাঁদের দফতরের কাজে ফাঁক আছে বা সম্প্রতি কেচ্ছা হয়েছে কোনও, তাঁরা কিঞ্চিৎ ভয়েই আছেন। বৃহস্পতিবার এমনই কিছু নাম ঘুরে বেরিয়েছে জেলা প্রশাসনিক ভবনে।

Advertisement

তালিকার প্রথম দিকেই রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নদিয়া জেলায় প্রসূতি মৃত্যুর হার কিছুটা কমলেও তা যে আশানুরূপ নয় তা মেনে নিচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারাও। ‘রেফার’ নিয়ে তো সাধারণ মানুষের ক্ষোভ অনেক দিনের। এই সদ্য জেলা হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোমে রোগী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। কর্তাদের এক জন তো বলেই ফেললেন, “কোনও কিছুই মুখ্যমন্ত্রীর নজর এড়ায় না। সুতরাং চাপে তো আছিই।”

সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (বিএডিপি) নিয়েও চাপে কর্তারা। ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে ৪৫টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সম্পুর্ণ হয়েছে মাত্র সাতটি। কাজ হয়েছে মাত্র ৩৩ শতাংশ। যদিও কর্তাদের দাবি, এই প্রকল্পের টাকা দেয় কেন্দ্র সরকার, তারা টাকা দিতে দেরি করাতেই কাজও দেরিতে হচ্ছে। কিন্তু এই যুক্তিতে চিঁড়ে ভিজবে কি না সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত নন। কিছুটা হলেও ভয়ে ‘বাংলা আবাস যোজনা’র অফিসারেরাও। এ বছর এই প্রকল্পে ৩৩৭৪৪টি ঘর গড়ার অনুমোদন পেয়েছে জেলা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ২৬৩৩৫টি ঘরের টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। বাকি ঘরের টাকা কেন এখনও উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলতে পারেন বলে আশঙ্কা। যদিও কর্তাদের দাবি, তাঁরা সব ঘরের অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু বাকি ঘরের টাকা এখনও কেন্দ্র পাঠায়নি। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রেও বন্দুক কেন্দ্রের ঘাড়েই।

সামগ্রিক ভাবে উন্নয়নমূলক কাজ নিয়েও চাপে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় যখন জেলা প্রশাসনিক ভবনের পাশ দিয়ে যাচ্ছে, তখনও এক মনে ফাইল দেখে যাচ্ছেন এক কর্তা। সামনে টেবিলের উপরে ফাইল আর জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে আসা রিপোর্টের স্তুপ। চাপে আছেন নাকি? প্রশ্ন শুনেই দীর্ঘশ্বাস, “কে নেই বলতে পারেন? যদি কোনও কারণে উনি আমার দফতর নিয়ে পড়েন, তা হলেই তো গেছি।”

ভরসা শুধু একটাই।

আজ পর্যন্ত প্রশাসনিক বৈঠকে কোনও বার তেমন ধমক খেতে হয়নি নদিয়ার কর্তাদের। সেই ‘গু়ড বয়’ ইমেজ আঁকড়েই তাঁরা মুখোমুখি হতে চাইছেন রায়বাঘিনীর!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement