কখনও মুরগি বা ডিম, কখনও গোটা কয়েক সজনে ডাঁটা বা টোপাকুল নিয়ে খুন-জখম ডোমকলে নতুন নয়।
শনিবার ফের তার সাক্ষী হল ডোমকল। মোটে ১২ টিন বালি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন হলেন আনারুল শেখ নামের বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তি। সকাল ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ডোমকলের পঞ্চাননপুর গ্রামে।
পুলিশ জানায়, মাস ছয়েক আগে আনারুলের কাছ থেকে ৩০ টিন বালি ধার নিয়েছিল প্রতিবেশী সাজাহান শেখ। দিন কয়েক আগে সে ১৮ টিন বালি ফেরত দিলেও ১২ টিন বাকি ছিল। এ দিন তা নিয়ে বচসার সময়ে সাজাহান বাঁশ দিয়ে আনারুলের মাথায় মারে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম আনারুলকে প্রথমে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু রাত পর্যন্ত সাজাহানকে ধরা যায়নি।
এক বাড়ির মুরগি অন্য বাড়িতে যাওয়া নিয়ে এর আগে খুন হয়েছিল ডোমকলের শম্ভুনগরে। ইসলামপুরের নসিপুর গ্রামে এক বাড়ির মুরগি গিয়ে পাশের বাড়িতে ডিম পেড়েছিল, সেই ডিম নিয়েও বেধেছিল গণ্ডগোল। এ বারের ঘটনা সেই খুন-জখমের তালিকায় নতুন সংযোজন।
আনারুলের পরিবারের অভিযোগ, প্রায় ছ’মাস আগে বাড়ি তৈরির সময়ে ৩০ টিন বালি ধার নিয়েছিল সাজাহান। কিন্তু ফেরত দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝোলাচ্ছিল সে। দিন কয়েক আগে ১৮ টিন ফেরত দিলেও পরে আর বাকিটা দিতে চাইছিল না। তা নিয়ে প্রথমে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। সেই সময়েই সাজাহান বাঁশ দিয়ে আনারুলের মাথায় মারে। ঘটনার পরেই গ্রাম ছেড়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে সপরিবার সাজাহান। এসডিপিও (ডোমকল) মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘পলাতককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
ভোটের সময়ে গণ্ডগোলে আগেও খুন হয়েছে পঞ্চাননপুরে। কিন্তু এত তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কখনও খুন হয়নি, বলছেন গাঁয়ের বাসিন্দারা। অনেকেই কার্যত অবাক। সকাল থেকেই গোটা গ্রাম থমথমে। আনারুলের মাসতুতো দাদা হাসরত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা ভাবতেও পারিনি যে পাশের বাড়ির লোকটা এ ভাবে আক্রমণ করতে পারে।’’ এসডিপিও বলেন, ‘‘বিবাদের সময়ে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হলে আনারুল জখম হন। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। অভিযুক্ত ও তার পরিবারের লোকজনের খোঁজ চলছে।’’