শোকস্তব্ধ: রবিবার ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র
ফের জমি নিয়ে বিবাদ। এবং ফের খুন। শনিবার জলঙ্গিতে খুন হন দাদা। পুলিশ ভাইকে গ্রেউতার করে। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই জমি বিবাদে খুন হলেন ভাই। এ বারে ঘটনাস্থল ডোমকল।
রবিবার ডোমকলের সারাংপুর গ্রামে নিহত হন আশরাফ আলি মণ্ডল (৬২)। গুরুতর জখম আশরাফ মণ্ডলের স্ত্রী নঙ্গরা বিবি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘পারিবারিক জমি নিয়ে বিবাদের জেরেই ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় আশরাফের এক দাদা রেজাউল মণ্ডল ও ভাই জাব্বার মণ্ডল-সহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। পুলিশের তদন্ত চলছে।’’
এ দিনের ঘটনার পরে জমি বিবাদের জেরে ডোমকল মহকুমা এলাকায় গত তিন দিনে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যা পাঁচ। গত বৃহস্পতিবার ডোমকলের তুলসিপুরে জমি বিবাদের জেরে বোমাবাজি হয়। বোমার আঘাতে জখম হন ৫ জন। ওই ঘটনার দু’ দিনের মাথায় জমি-জটিলতার জেরে ভাইয়ের হাতে খুন হন দাদা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের ডোমকলে ভাইকে খুন করার অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে ফজরের নমাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আশরাফ আলি। তার পরে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরে আশরাফের স্ত্রী নঙ্গরা বিবি ঘুম থেকে উঠে গোয়ালঘর পরিস্কার করতে গেলে সেখানেই চড়াও হন আশরাফের এক দাদা রেজাউল মণ্ডল, তার ভাই জাব্বার মণ্ডল ও তার দলবল। আচমকা মারধর শুরু করে তারা। গ্রামের মানুষ এসে নঙ্গরা বিবিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তির বন্দোবস্ত করেন। ওই ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দুরে বাগানের একটি আম গাছের সঙ্গে দড়ি বাঁধা অবস্থায় আশরাফ মণ্ডলকে কাতরাতে শোনেন গ্রামবাসীরা। তাঁকেও উদ্ধার করে গ্রামের মানুষ ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে আশরাফকে পাঠান হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বহরমপুরে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান ওই বৃদ্ধ।
গ্রামে ১০ কাঠা জমির উপরে তিন ভাইয়ের বাড়ি। অন্য দুই ভাই গ্রামের একটা পাড়ায় বাড়ি করেছেন। আর এই দশ কাঠা জমিতে ঘর করতে গিয়ে প্রায় গণ্ডগোল লেগেই থাকে তিন পরিবারের মধ্যে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আশরাফের ভাইপো সামিউল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি কাকার বাড়িতেই রাতে ছিলাম। সকাল ছ’টা নাগাদ কাকির কান্নার আওয়াজে ঘুম ভাঙে। তাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও তাড়া করে রেজাউল, জাব্বার কাকা-সহ তার ছেলেরা। পরে গ্রামের মানুষ এসে কাকিকে উদ্ধার করে। তার পরে কাকার খোঁজ শুরু হয়। ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁর হাত-পা কেটে দেওয়া হয়েছে।’’