ফর্ম ভরেও টিভি সেই অন্ধকারে

হোগলবেড়িয়ার যমশেরপুরের রীতা সান্যালের টিভিতে গত তিন দিন ধরে স্টার জলসা ও জি বাংলা-সহ বহু চ্যানেল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই সমস্যায় পড়েছেন তেহট্টের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ দত্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২২
Share:

ফেব্রুয়ারির ন’ তারিখ থেকে টিভিতে কোনও চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন না নবদ্বীপের সম্পৎ পোদ্দার। অথচ, তার আগের দিনই স্থানীয় কেবল অপারেটরের কাছে ছাপানো চ্যানেল-তালিকা থেকে বেছে মোট সতেরোটি চ্যানেলে টিক দিয়ে নিজের নাম, ঠিকানা, কার্ড নম্বর, মোবাইল নম্বর-সমেত জমা দিয়েছিলেন। তালিকা থেকে পছন্দসই চ্যানেল বাছার জন্য সম্পৎবাবুর পরিবারের কেবলের মাসিক খরচ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েও গিয়েছিল। কিন্তু তালিকা জমা দেওয়ার পর দিন থেকে বাছাই করা চ্যানেল দূরে থাক, সম্পূর্ণ ব্ল্যাক আউট হয়ে গিয়েছে বাড়ির টেলিভিশন।

Advertisement

হোগলবেড়িয়ার যমশেরপুরের রীতা সান্যালের টিভিতে গত তিন দিন ধরে স্টার জলসা ও জি বাংলা-সহ বহু চ্যানেল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই সমস্যায় পড়েছেন তেহট্টের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ দত্ত।

গ্রাহককে নিজের পছন্দমতো টেলিভিশন চ্যানেল দেখার স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ‘টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ বা ট্রাইয়ের নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে নাজেহাল গোটা কেবল সম্প্রচার ব্যবস্থা। গ্রাহক থেকে অপারেটর— সকলেই বিভ্রান্ত।

Advertisement

কথা ছিল, ট্রাইয়ের নির্দেশে ২৯ ডিসেম্বর রাত বারোটার পর থেকে কেবল টিভি, ডিটিএইচ, আইপিটিভি সহ সব ধরনের টেলিভিশনে সমস্ত পে চ্যানেলে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। এর পর থেকে গ্রাহক শুধুমাত্র তাঁর পছন্দমতো চ্যানেলগুলিই দেখতে পাবেন। এ জন্য তাঁকে প্রতিটি চ্যানেলের জন্য নির্দিষ্ট দাম দিতে হবে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে তা সাময়িক ভাবে স্থগিত হয়ে যায়। পরে ফের আদালতের নির্দেশে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ট্রাইয়ের পূর্ব ঘোষণা মতো নতুন ব্যবস্থা কার্যকরী হওয়া শুরু হয়েছে। তাতেই বাড়ছে বিপত্তি এবং বিভ্রান্তি।

এত দিন গ্রাহক দু’ধরনের চ্যানেল দেখতে পেতেন। ফ্রি টু এয়ার এবং পে চ্যানেল। শ’দুয়েক টাকার বিনিময়ে দুই রকম চ্যানেল মিলিয়ে দেড়শো থেকে তিনশো পর্যন্ত চ্যানেল দেখা যেত। কিন্তু ট্রাইয়ের নির্দেশে বাতিল হয়ে গিয়েছে ওই ব্যবস্থা। এখন এক জন গ্রাহক শুধু সেই চ্যানেলগুলোই দেখতে পাবেন যেগুলির জন্য তিনি পয়সা দেবেন। সেই সব চ্যানেল তিনি নিজেই বাছবেন। তার সঙ্গে থাকবে কমবেশি একশোটি ‘ফ্রি টু এয়ার’ চ্যানেল। ৮ ফেব্রুয়ারির আগে সর্বত্র স্থানীয় অপারেটরেরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় দেড়শো পে চ্যানেলের নাম এবং সেগুলি দেখার জন্য মাসে কত করে খরচ পড়বে তার দীর্ঘ তালিকা এবং ফর্ম। কিন্তু যাঁরা ফর্ম পূরণ করছেন তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই বিনা কারণে সম্প্রচার বন্ধ হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নবদ্বীপ এবং সংলগ্ন অঞ্চলের কেবল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার তরফে অজয় কর বলেন, “সমস্যার সঠিক কারণ আমরাও বুঝতে পারছি না। যারা ফর্ম পূরণ করে জমা দিচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম মতো সেট টপ বক্সের সংযোগটি নতুন পদ্ধতিতে অ্যাক্টিভেট করছি এবং ফ্রি টু এয়ার চ্যানেলের সঙ্গে গ্রাহকের বাছাই করা চ্যানেলগুলি জুড়ে দিচ্ছি। হিসাব মতো এর পর থেকেই নতুন চ্যানেলসহ দেখতে পাওয়ার কথা। কিন্তু সমস্যা হল, অনেকের ক্ষেত্রেই নতুন অ্যাক্টিভেশন কাজ করছে না। কিন্তু নতুন পদ্ধতি চালু করতে গিয়ে আগের পদ্ধতি বন্ধ করতে হচ্ছে। ফলে গ্রাহক কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন