এখনও হুঁশ ফেরেনি কান্দির

বাজারে ঢোকার রাস্তায় বিদ্যুতের তার কুণ্ডলী পাকিয়ে ঝুলছে। এদিক সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এবং পিসবোর্ডের কার্টন। দমকা হাওয়ায় নাকে আসছে কেরোসিনের গন্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share:

কান্দির সেই বাজার। নিজস্ব চিত্র

বাজারে ঢোকার রাস্তায় বিদ্যুতের তার কুণ্ডলী পাকিয়ে ঝুলছে। এদিক সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এবং পিসবোর্ডের কার্টন। দমকা হাওয়ায় নাকে আসছে কেরোসিনের গন্ধ। কারণ, বাজারের সামনেই রেশন দোকান। সেখানকার জিনিসপত্র বাজারেই মজুত করে রাখা হয়। কোনও বৈদ্যুতিক তারে শর্ট সার্কিট কিংবা আগুনের স্ফূলিঙ্গ থেকে যে কোনও সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ঘটার আশঙ্কা। এক কথায় ‘জতুগৃহ’ কান্দির কালী কয়াল বাজার।

Advertisement

কলকাতার বাগড়ি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার রেশ ফিকে হয়নি। জেলার বাজারগুলিরও বেশিরভাগেরই যে অবস্থা ভাল না, তার কিছুটা আন্দাজ মিলবে কালী কয়াল বাজারে। এমনিতে কান্দি শহর তেমন পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে উঠেছে। কালী কয়াল বাজারে এক সঙ্গে প্রায় ৩০টি দোকান রয়েছে। তবে বেশ কিছু ব্যবসায়ী রয়েছেন যাঁরা একাধিক দোকানের মালিক। বেশ কিছু দোকান ঘরগুলি গুদাম হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। কী নেই সেখানে! ফাঁকা কার্টন থেকে বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি, পোশাক-আশাক। সবই মজুত রয়েছে। বইয়ের দোকানও আছে।

বাজারের মধ্যেই বিমা সংস্থার শাখা অফিস। সেখানে লোকজনের আনাগোনা লেগে থাকে। ওই জায়গাতেও বেশ কিছু ফাঁকা কার্টন রাখা। বিমা সংস্থার এক আধিকারিক চিত্তরঞ্জন দাস বললেন, ‘‘সরু সিঁড়ি দিয়ে দফতরে যাতায়াত করতে হয়। মাঝেমধ্যে সিঁড়িতে পিসবোর্ডের কার্টন রাখা থাকে। সবই দাহ্য। দফতরের সামনেও কার্টন রাখেন অনেকে। বহুবার সেগুলি সরিয়ে নিতে বলেছি। লাভ হয়নি। দুর্ঘটনা ঘটলে যে কী হবে, তা ভেবেই আতঙ্কে রয়েছি।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বাজারে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। কাছাকাছি জলের উৎস বলতে পুরসভা থেকে সংযোগ নেওয়া পাঁচশো লিটারের জলের একটি ট্যাঙ্ক। বাজারের অন্যতম মালিক এক ব্যক্তি নিজে রেশন দোকান চালান। ফলে তাঁরই রেশনের জিনিসপত্র মজুত থাকে বাজারের আনাচে-কানাচে। ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, কোনওভাবে বাজারে আগুন লাগলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। ব্যবসায়ী সত্যানন্দ সাহার কথায়, “বিদ্যুতের তারগুলি ঝুলছে। সেগুলি কতদিনের পুরনো কেউ জানে না। জলেরও কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনকি আগুন লাগলে বাজার থেকে বেরনোর দ্বিতীয় রাস্তা নেই।’’

বাজারের অন্যতম মালিক অনিল দাস স্বীকার করেছেন, ‘‘বাজারে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। আমি প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে নিজেদের উদ্যোগে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করতে বলেছি। আমি নিজেও করেছি।” এনিয়ে কান্দির মহকুমাশাসক অভীক দাস বলেন, “শহরের বাজারগুলিতে অগ্নিনির্বাপণের কী ব্যবস্থা আছে, তা জানতে আমি শীঘ্রই দমকল এবং পুরসভাকে নিয়ে বৈঠক করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement