থামল বাইক, মহিলাকে ফুঁড়ল গুলি

কল্যাণীর এসডিপিও উত্তম ঘোষ বলেন, “এক মহিলা গুলিবিদ্ধ। কারণ স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’’ তবে সোমবার রাতে চাকদহের সিংহেরবাগান এলাকায় এ ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share:

জখম কাকলি দেবী।

রাতের খাওয়ার পরে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন এক দম্পতি। কিছুটা হাঁটার পরে পিছিয়ে পড়েন যুবক। একাই হাঁটছিলেন তাঁর স্ত্রী। আচমকাই একটা মোটরবাইক থেকে ছিটকে আসে গুলি। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন কাকলি সরকার নামে বছর চৌত্রিশের ওই মহিলা। তাঁর স্বামী কাজল যখন ছুটে আসেন ততক্ষণে হাওয়ার বেগে মিলিয়ে গিয়েছে সেই বাইক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাকলি বর্তমানে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা তাঁর পেট থেকে গুলি বের করেছেন।

Advertisement

কল্যাণীর এসডিপিও উত্তম ঘোষ বলেন, “এক মহিলা গুলিবিদ্ধ। কারণ স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’’ তবে সোমবার রাতে চাকদহের সিংহেরবাগান এলাকায় এ ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাকলির স্বামী কাজল জানান, মোটরবাইকে দু’জন ছিল। তাদের মাথায় হেলমেটও ছিল।

ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে জয়কৃষ্ণপুরে কাজলের বাড়ি। তিনি বর্ধমানে একটি ঠিকাদারি সংস্থায় কাজ করেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসেন। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে এসেছিলেন। এ দিন রাতে পরিবারের সকলের সঙ্গে রাতের খাওয়া সেরে তাঁরা বাইরে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। তখনই এমন কাণ্ড। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কোনও রকমে স্ত্রীকে প্রথমে বাড়িতে নিয়ে আসেন কাজল। তারপর এলাকার লোকজন ডেকে কাকলিকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে কাজল এ দিন বলছেন, ‘‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাদের কোনও শত্রুও নেই। তার পরেও অকারণে আমার স্ত্রীকে ওরা কেন গুলি ছুড়ে পালাল বুঝতে পারছি না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় সম্প্রতি দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়েছে। তাদেরই কেউ হয়তো এমন কাজ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, অকারণে ওই মহিলাকে কেন গুলি করবে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের অনুমান, হয়তো অন্য কাউকে মারতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ভুল করে তারা ওই মহিলাকে গুলি ছুড়েছে।

Advertisement

টিনের চাল দেওয়া পাকা ঘরে মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে কাজলের সংসার। কমল চাকদহ কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র, মেয়ে কোয়েল পূর্বাচল বালিকা বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। কাজলের মা আলোরানি সরকার বলেন, “আমি নাতি নাতনিদের নিয়ে শুয়েছিলাম। ছেলে দরজার কাছে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘মা দরজা খোলো।’ তড়িঘড়ি দরজা খুলে দেখি, বৌমার সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।’’ কাজলের পড়শিরা জানাচ্ছেন, ওই পরিবার সকলের সঙ্গেই ভাল ব্যবহার করে। ওদের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা আছে বলেও তাঁদের জানা নেই। তবে কাজল বাড়িতে এলে স্ত্রীকে নিয়ে রাতের দিকে হাঁটতে বেরোতেন। এ দিনও বেরিয়েছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ওই একই সময়ে কি অন্য কারও রাস্তায় বেরোনোর কথা ছিল, নাকি দুষ্কৃতীদের ‘টার্গেট’ ছিলেন এই মহিলাই? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement