লালগোলা

বরাদ্দ টাকা পড়েই, গ্রাম গিলছে নদী

ভাঙন রোধের জন্য সেই ডিসেম্বরে বরাদ্দ হয়েছে ২১ কোটি টাকা। কিন্তু নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শুরু করতে পারেনি সেচ দফতর। ফলে ঠেকানো যায়নি ভাঙন। বন্যার জল নামতে শুরু করতেই হুড়মুড়িয়ে ভাঙছে লালগোলার পণ্ডিতপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১০
Share:

বাঁশ ফেলে ভাঙন রোখার চেষ্টা।— নিজস্ব চিত্র

ভাঙন রোধের জন্য সেই ডিসেম্বরে বরাদ্দ হয়েছে ২১ কোটি টাকা। কিন্তু নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শুরু করতে পারেনি সেচ দফতর। ফলে ঠেকানো যায়নি ভাঙন। বন্যার জল নামতে শুরু করতেই হুড়মুড়িয়ে ভাঙছে লালগোলার পণ্ডিতপুর। বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা তলিয়ে গিয়েছে পদ্মায়। স্থানীয়দের আশঙ্কা ভাঙন যে ভাবে এগোচ্ছে, মানচিত্রে পণ্ডিতপুর ও চিন্তামণি গ্রামদু’টি আদৌ থাকবে তো।

Advertisement

গ্রাম দু’টি ঘিরে রয়েছে প্রায় আট ফুট উঁচু ‘নবাব সড়ক’। খান্ডুয়া আউট পোস্টে যাতায়াতের জন্য বিএসএফ জওয়ানেরা সেই ব্যবহার করেন। ভাঙনে তলিয়ে যেতে পারে সেই রাস্তাও।

ভাঙনের তীব্রতা দেখে শঙ্কিত সেচ দফতরের ভাঙন প্রতিরোধ শাখার কর্তারাও। ভাঙনের খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাঁদের নির্দেশে ভাঙন ঠেকাতে ভরা পদ্মায় বাঁশঝাড়ের সঙ্গে বালি ভরা বস্তা বেঁধে পাড়ে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু তাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ কমেনি। এমনকী অনেকে বাধাও দেন। খবর পেয়ে আসেন পুলিশকর্মী ও বিএসএফ জওয়ানেরাও।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিনের দাবি, এলাকার কিছু মস্তান সেচ দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভাঙন রোধের কাজে সরকারি অর্থের নয়ছয় করে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের।’’ আরও এক বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘গত বছর ডিসেম্বরে ময়া ও পণ্ডিতপুরে পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী ২১ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন। তারপরেও নয় মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনও কাজই শুরু হয়নি। সময়ে কাজ হলে ভাঙন ঠেকানো যেত।”

সেচ দফতরের এক ইঞ্জিনিয়র জানান, এই এলাকায় পদ্মার জল বেড়ে বন্যা হয়েছে দু’সপ্তাহ আগে। নদী পাড়ের মাটির উপরের দু’মিটার শক্ত কাদা। নীচে অশক্ত বালি। বন্যার জল এখন নেমে গেলেও জল শুষে মাটির ওজন বেড়েছে। নীচের বালি মাটি সে ভার সইতে পারছে না। ফলে জলের সামান্য স্রোতের ধাক্কাতেই নিচের বালি সরে ধসছে পাড়।

রঘুনাথগঞ্জের ভাঙন প্রতিরোধ শাখার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা ময়ায় ৭৫০ মিটার স্পার বাঁধানোর জন্য। টেন্ডার এবং ওয়ার্ক অর্ডার সবই হয়ে রয়েছে। কিন্তু তারপরেই বিধানসভা নির্বাচন দিন;ণ চলে আসায় কাজ শুরু যায়নি। নির্বাচন মিটতেই বর্ষায় পদ্মার জল বেড়ে এলাকায় বন্যার সৃস্টি হয়। এখন বন্যা কমলেও পদ্মার এই জলস্রোতে স্পার বাঁধানো সম্ভব নয়। আপাতত বাঁশ ঝাড় ফেলে জলের ধাক্কা থেকে পাড়কে বাঁচানোর চেষ্টা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। স্থানীয় মানুষকে পরিস্থিতি বোঝানো হয়েছে। পদ্মার জলস্ফীতি কমলেই স্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন