পঞ্চায়েত ভোটে টাকা দিয়েই কি বিজেপি সফল?

আগে কোনও দিন নদিয়া জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। দু’তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত, একটি কি দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। এ বার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৭
Share:

বিজেপির সাফল্য। নিজস্ব চিত্র

বিভিন্ন মহলে কানাঘুষো কথাটা ঘুরছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। অনেকেই বলছিলেন, বিজেপির এক তাবড় নেতা নাকি নদিয়ায় ঢুকেছেন টাকার থলি নিয়ে।

Advertisement

সেই টাকা কি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্য কেনার জন্য? দিন দুই আগে একটি টেলিফোন সংলাপ সামনে আসার পরে সেই দাবিটাই জোরালো হয়ে উঠেছে।

আগে কোনও দিন নদিয়া জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। দু’তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত, একটি কি দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। এ বার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। বিশেষ করে উত্তর নদিয়ায়। সেখানে বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত তারা একক গরিষ্টতায় দখল করেছে। কোথাও কোথাও নির্দল হয়ে দাঁড়ানো বিক্ষুব্ধ তৃণমূল সদস্যদের নিয়ে বোর্ডও গড়েছে।

Advertisement

এখন টেলিফোন সংলাপের প্রসঙ্গ সামনে আসতেই বেশ কিছু এলাকায় তাদের সাফল্যের রসায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। অনেকেরই সন্দেহ, সেই তালিকায় আছে কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত। একটিতে নির্দলের সমর্থনে তারা বোর্ড গড়তে পেরেছে। আর একটিতে তৃণমূলের ভিতরে ভাঙনের সুযোগ নিয়ে তারা বোর্ড গঠন করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের একটি পঞ্চায়েতেও নাকি একই চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহাদেব সরকারের এলাকা কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের সাধনপাড়া ১ ও ২ পঞ্চায়েতের পাশাপাশি বেলপুকুর পঞ্চায়েতও দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির দখলে। তার উপরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে জেলা জুড়ে তারা কিছুটা হলেও শক্তিবৃদ্ধি করেছে। ফলে কিছু এলাকায় তারা ঘোড়া কেনাবেচা করার চেষ্টা করতে পারে বলে তৃণমূল শিবিরে অনেকেই সন্দেহ করছেন।

বিজেপি-তেও মহাদেবের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরাও এমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন কেউ-কেউ। যদিও মহাদেব তা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “এখন আমাদের যা শক্তি তাতে টাকা দিয়ে সদস্য কেনার প্রয়োজন হয় না। আমাদের দল সেই পথে বিশ্বাসও করে না।” তা হলে দলের তহবিলের দায়িত্বে থাকা এক নেতাকে ফোন করে তাঁকে টাকা চাইতে শোনা গেল কেন? মহাদেবের দাবি, “জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছি আমি। তাতেই ভয় পেয়ে তৃণমূল এই ধরনের ভুয়ো ফোনালাপ তৈরি করে খাওয়ানোর চেষ্টা করছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত পাল্টা বলেন, “দুষ্কৃতী, টাকা আর সাম্প্রদায়িক বাতাবরণের ত্রিশূল দিয়ে ওরা জিততে চাইছে। সেটাই তো প্রমাণ হয়ে গেল!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন