প্রশ্নপত্রের প্যাকেটে বৈদ্যুতিন নজরদারি

ছাত্রদের টেক্কা দিয়ে উঠে আসছে ছাত্রীরা

প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা রুখতে গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মাধ্যমিকের নবদ্বীপ কেন্দ্রের ইনচার্জ সারস্বত মন্দিরের প্রধানশিক্ষক বিজনকুমার সাহা জানান, পর্ষদের তরফে প্রশ্নপত্রের জন্য ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, পরীক্ষাকেন্দ্রে খাতা পৌঁছবে বিশেষ ‘চিপ’ লাগানো প্যাকেটে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০২:১৩
Share:

ঠিক যেন যুদ্ধকালীন তৎপরতা! স্কুলে ব্যস্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী। পড়ুয়ারা মগ্ন নিজ পাঠে। অভিভাবকদের কড়া নজর। সক্রিয় প্রশাসনও। আজ, সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিক। ভালয় ভালয় পরীক্ষা উতরে যায়, তার জন্য চেষ্টার খামতি রাখছে না কোনও পক্ষ।

Advertisement

প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা রুখতে গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মাধ্যমিকের নবদ্বীপ কেন্দ্রের ইনচার্জ সারস্বত মন্দিরের প্রধানশিক্ষক বিজনকুমার সাহা জানান, পর্ষদের তরফে প্রশ্নপত্রের জন্য ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, পরীক্ষাকেন্দ্রে খাতা পৌঁছবে বিশেষ ‘চিপ’ লাগানো প্যাকেটে।

পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্র থাকবে পর্ষদের স্টিকার লাগানো নির্দিষ্ট প্যাকেট। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার নিয়ম ১১টা ৪০ মিনিটে। ওই সময়ের আগে কেউ প্যাকেট খুললে পর্ষদের কাছে সার্ভারের মাধ্যমে খবর পৌঁছবে। তখন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বেলা ১১টা ৪৫-এ পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। খাতা দেওয়া হবে ১১টা ৫০-এ। লেখা শুরু হবে ১২টা থেকে। চলবে বেলা ৩টে পর্যন্ত।

Advertisement

পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে পর্ষদের দাওয়াই, পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল বা অন্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে কড়াকড়ি ও পড়ুয়ারা ভাঙচুর করলে স্কুলের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়। এ বার পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর থেকে মোবাইল, ক্যালকুলেটর বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পাওয়া গেলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের নজরদার, কর্মী বা শিক্ষকের কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন, এ রকম চার জনের কাছে শুধু মোবাইল রাখার অনুমতি দিয়েছে পর্ষদ। কারণ, তাঁরা সরাসরি যোগাযোগ রাখবেন পর্ষদের সঙ্গে।

এ দিকে সারা রাজ্যের মতো নদিয়া ও মুর্শিদাবাদেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এই দুই জেলাতেই বেড়েছে ছাত্রীর সংখ্যাও। গত বছর নদিয়ায় ছাত্রী ছিল ৩৮০৭৬ জন। এ বছর ৩৯৪২৫ জন। পড়শি জেলা, মুর্শিদাবাদে গত বছর ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৪৮২৭। এ বছর ৫৩,১৯৬ জন। জেলা শিক্ষা দফতর ও শিক্ষকদের দাবি, রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প ও কন্যাশ্রীর কারণেই ছাত্রীরা ক্রমশ এগিয়ে আসছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী বিশ্বাস দে বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে যাতে সময়ে পৌঁছতে পারে সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের কাছে আবেদন, অসুবিধার মুখে পড়লে কন্ট্রোল রুমে ফোন করুন। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’ মুর্শিদাবাদের জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিক অনন্তচন্দ্র সরকার জানান, সরকারি ও বেসরকারি পর্যাপ্ত বাস থাকবে। নদিয়ার জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌমিত্র বিশ্বাস বলেন, “পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য আমরা সব রকম ভাবে তৈরি।” নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষে অসীম দত্ত বলছেন, “পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই রুটে বাস বাড়ানো হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে ছোট গাড়ির চালকদেরও। নদিয়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও গাড়ির চালক পরীক্ষার্থীদের নিতে অস্বীকার করলে কিংবা বেশি ভাড়া চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন