একটা পেট তো কমবে, তাই নাবালিকার বিয়ে

অন্তত একটা পেট তো কমবে!

Advertisement

বিমান হাজরা

সুতি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪১
Share:

সম্মতি: পুলিশের কথায় মিলল বিয়ে বন্ধ রাখার সম্মতি। নিজস্ব চিত্র

অন্তত একটা পেট তো কমবে!

Advertisement

তাই চেয়েচিন্তে নাবালিকার মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন মা।

স্বামী শয্যাশায়ী। বিড়ি বেঁধে কোনও রকমে দিন চলছিল। নিজের অসুস্থতার জন্য সেটাও আর করতে পারছিলেন না। সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। পেট কমাতে তাই মেয়ের বিয়ের ঠিক করেছিলেন মা। ৮ মে ছিল বিয়ের দিন।

Advertisement

সুতির আমুহা গ্রামে নাবালিকার বিয়ের সেই খবর পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা পুলিশ নিয়ে বুধবার হাজির হয় ওই বাড়িতে। আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাও। বাড়িতে হাজির হন শ’দুয়েক গ্রামবাসীও। সকলের সামনেই নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বন্ধের আশ্বাস দেন কিশোরীর মা।

একই সময়ে প্রশাসনের কর্তারা আবিষ্কার করেন, ওই পরিবারের দুর্দশার ছবিও।

গ্রাম পঞ্চায়েতের সহকারী এগজিকিউটিভ হিমাদ্রী দাস জানান, সরকারি জমিতে বাড়ি। ডিজিট্যাল রেশন কার্ড থাকায় সস্তায় চাল পান। কিন্তু জব কার্ড নেই। তিনি বলেন, “কিশোরীর মায়ের নামে জব কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বাড়ির পাশেই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বাগানে ১০০ দিনের কাজে নিয়োগ করা হবে তাঁকে।”

ওই নাবালিকার মাও মানছেন, মেয়ের কম বয়সে বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। ‘‘কিন্তু সংসার যে আর চলে না। তাই মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। তাতে অন্তত একটা পেট তো কমবে।” —বলতে বলতে কান্নায় গলা বুজে আসে মায়ের।

বিডিও সন্দীপ ভট্টাচার্য বলছেন, “নাবালিকা বিয়ের বড় কারণ আর্থিক দুরবস্থা। চাইল্ড লাইনের সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করব কী ভাবে ওই এলাকায় সচেতনতা
বাড়ানো যায়।”

তিনি জানান, ওই পরিবারের দুরবস্থার কথাও জেনেছেন। বিপিএল কার্ড থাকা না থাকা আর জরুরি নয়। সবরকম সরকারি সুবিধা যাতে ওই পরিবার পায় তা সুনিশ্চিত করা হবে। ওই কিশোরী-সহ পরিবারের তিন ছেলে মেয়েকে স্কুলমুখি করে তাদের যাতে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা যায় সেটাও দেখতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েতকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন