খুনে ধৃত প্রাক্তন আইজির ছেলে

সুদীপ্ত ও তাঁর দুই সঙ্গী সঞ্জয় বিশ্বাস ও অজয় বিশ্বাসের নামে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অসীমবাবুর স্ত্রী মীনা গোস্বামী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০২:১৫
Share:

প্রতীকী চিত্র

নিজের গাড়ির চালকের সঙ্গে বকেয়া টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন আইজি (ওয়েলফেয়ার) নন্দকুমার বিশ্বাসের ছেলে সুদীপ্ত বিশ্বাসের। গত সোমবার সুদীপ্তবাবুর বাড়িতেই পাওয়া যায় সেই গাড়িচালক অসীম গোস্বামী-র ঝুলন্ত মৃতদেহ। সুদীপ্ত ও তাঁর দুই সঙ্গী সঞ্জয় বিশ্বাস ও অজয় বিশ্বাসের নামে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অসীমবাবুর স্ত্রী মীনা গোস্বামী। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

প্রাক্তন আইজি-র ছেলের নাম খুনের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে কল্যাণী শহর জুড়ে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে এই ঘটনা। নন্দকুমারবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্টই হাতে আসেনি। ফলে খুন কিনা সেটাই নিশ্চিত নয়। তা ছাড়া, আমার ছেলে কেন দিনে-দুপুরে কাউকে বাড়িতে ডেকে খুন করতে যাবে?’’ ঘটনার দিন নন্দকুমারবাবু বাড়ির দোতলায় ছিলেন। তাঁর বাড়িতে এক জন মারা গেলেন অথচ প্রাক্তন পুলিশকর্তা বাড়িতে থেকেও কিছুই টের পেলেন না, এটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

বুধবার সঞ্জয় ও অজয়ের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে সুদীপ্তবাবু তাঁর বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে বলে জানানোয় তাঁকে জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে পুলিশি পাহারায় আপাতত তিনি চিকিৎসাধীন। অভিযুক্তদের কেন পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিল না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ এ ব্যাপারে যুক্তি দিয়েছে, এই ঘটনায় কোনও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের দরকার নেই। তা ছাড়া, অভিযুক্তদের প্রত্যেককেই ধরা হয়েছে। তাঁদের বয়ানও নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাই পুলিশ তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নেয়নি।

Advertisement

পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, সুদীপ্তবাবুর গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। মাস ছয়েক ধরে গয়েশপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অসীম গোস্বামী তাঁর গাড়ি চালাতেন। কিন্তু টাকা-পয়সা নিয়ে ঝামেলার জেরে সম্প্রতি তিনি কাজে যাওয়া বন্ধ করেছিলেন। মীনাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী পনেরো দিনের পারিশ্রমিক-বাবদ সুদীপ্তর কাছ থেকে হাজার চারেক টাকা পেতেন। টাকা না-পেয়ে সুদীপ্তবাবুর দেওয়া একটি মোবাইল তাঁরা বন্ধক দেন। তা নিয়ে বিবাদ আরও চরমে ওঠে। সোমবার এর একটা বিহিত করতে অসীমবাবু সুদীপ্তদের বাড়ি যান।

মীনাদেবীর অভিযোগ, ‘‘ওই দিন দুপুর ২টো নাগাদ সঞ্জয়বাবু এসে আমাকে প্রথমে জানান, আমার স্বামী নাকি মালিকের বাড়ি গিয়ে ঝামেলা করছেন। আরও আধঘণ্টা পরে এসে সঞ্জয় বলেন, ‘ আপনার স্বামী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে!’ আমি পাড়ার লোকদের নিয়ে দৌড়ই।’’ মঙ্গলবার মৃতদেহের
ময়না-তদন্ত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন