— প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভবনের মধ্যেই মহিলা প্রধানকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে রাজারহাটের পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের দফতরে। রাতে অভিযোগ পাওয়ার পরেই টেকনো সিটি থানার পুলিশ এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম সুভাষ মণ্ডল।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে পঞ্চায়েত ভবন থেকে রাজারহাট ব্লকে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন পঞ্চায়েত-প্রধান পিঙ্কি মণ্ডল। অভিযোগ, হঠাৎই পঞ্চায়েত ভবনের ভিতরে ১৫-১৬ জন ঢুকে পড়েন। জমি সংক্রান্ত একটি সমস্যার সমাধান করার জন্য পঞ্চায়েত-প্রধানকে বলেন স্থানীয় দক্ষিণ চকপাচুরিয়ার বাসিন্দা কৃষ্ণা মণ্ডল। পিঙ্কি তাঁকে জানান, তাঁর সময় নেই। জরুরি বৈঠকে যেতে হবে। অভিযোগ, তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষ্ণা বচসায় জড়িয়ে পড়েন পিঙ্কির সঙ্গে। তখনই কৃষ্ণার এক আত্মীয় মোবাইল ফোনে সেই বচসার রেকর্ডিং করেন বলে অভিযোগ। তাতে আরও রেগে যান পঞ্চায়েত-প্রধান। তিনি ওই আত্মীয়ের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেন এবং তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। পিঙ্কির দাবি, তখনই পাল্টা তাঁকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন কৃষ্ণার সঙ্গে থাকা লোকজন। মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পিঙ্কি। এই ঘটনায় পঞ্চায়েত ভবনের মধ্যেই তৈরি হয় উত্তেজনা। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পঞ্চায়েত সদস্যেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় পঞ্চায়েত-প্রধান লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর দাবি, তিনি আতঙ্কিত। যাঁরা কথা বলতে এসেছিলেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। জমি সংক্রান্ত বিষয়ও তিনি দেখেন না। তাঁর উপরে হামলা চালানো হয়েছে। যদিও হামলার অভিযোগ খারিজ করে অভিযুক্ত কৃষ্ণা মণ্ডল জানান, সরকারি পাট্টা পাওয়া জমিতে গত এক মাস ধরে তিনি নির্মাণের কাজ করতে পারছেন না। ক্রমাগত কাজ আটকে দেওয়া হচ্ছে। আদালত থেকে নির্দেশ পেয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ফের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর কারণ জানতেই তাঁরা পঞ্চায়েত ভবনে গিয়েছিলেন। তাঁর আরও দাবি, পঞ্চায়েত-প্রধানই প্রথমে তাঁর গায়ে হাত তুলেছেন। তাই তিনি বাধা দিয়েছিলেন। প্রধানকে মারধর করা হয়নি।
মঙ্গলবার রাতেই পিঙ্কিকে নিয়ে টেকনো সিটি থানায় গিয়েছিলেন রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। থানা থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। রাজারহাটে কোনও দিন এমনটা ঘটেনি। পঞ্চায়েত-প্রধান খুব ভাল মানুষ। সকলের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন। মনে হচ্ছে, চক্রান্ত করে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।’’
বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূলের আমলে কোনও সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত-প্রধানের গায়ে হাত তুলছেন, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। ওই এলাকায় শাসকদলের দাদা-দিদিদের তুষ্ট না করে কেউ একটি ইটও গাঁথতে পারে না। তাই আদতে কী ঘটনা ঘটেছিল, তার যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে