বোমাবাজি, ছোটদের ঝগড়ার জেরে তপ্ত বদুয়া

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে গন্ডগোল, জখম কিংবা খুন নতুন কিছু নয়। বেড়া টপকে মুরগি চলে গিয়েছিল পড়শির বাড়িতে। তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে মুরগির পায়ে চোট লাগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়ঞা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৯ ০২:০৪
Share:

সুনসান গ্রাম। —নিজস্ব চিত্র।

ছিল ছোটদের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে নিছক ঝগড়া। হয়ে গেল বড়দের মধ্যে অশান্তি, মারপিট এবং বেদম বোমাবাজি। সোমবার বড়ঞার বদুয়া গ্রামের ওই ঘটনায় মোট আট জন জখম হয়েছেন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে গন্ডগোল, জখম কিংবা খুন নতুন কিছু নয়। বেড়া টপকে মুরগি চলে গিয়েছিল পড়শির বাড়িতে। তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে মুরগির পায়ে চোট লাগে। সেই নিয়ে খুন হন এক জন। এক জনের মুরগি ডিম পেড়েছিল অন্য জনের বাড়িতে। তা নিয়েও তুলকালাম। শেষতক খুন। নলকূপের জল কোন দিক দিয়ে যাবে তা নিয়েও গন্ডগোলের জেরে খুনের ঘটনা ঘটে। জমির আলে পড়া এক সজনে গাছের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করেও খুন হন এক প্রৌঢ়।

দীর্ঘ সেই তালিকায় এ বার ঢুকে পড়ল বদুয়াও। ভরতপুরের বিন্দারপুর গ্রামেও বছর তিনেক আগে এ ভাবেই ছোটদের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বড়দের মধ্যে বোমাবাজি হয়েছিল। সেই ঘটনায় এক জন মারাও গিয়েছিলেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে বদুয়ার মাঠে ক্রিকেট খেলছিল গ্রামের মোড়ল পরিবারের জনা কয়েক কিশোর। সেই সময় ওই গ্রামের মল্লিক পরিবারের এক কিশোর গরু নিয়ে মাঠ থেকে ফিরছিল। গরুগুলি মাঠের উপর দিয়ে নিয়ে আসার সময় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। তা নিয়েই ছোটদের মধ্যে বচসা হয়। অভিযোগ, এর পরেই আসরে নামে বড়রা। মল্লিক পরিবারের কয়েক জন মাঠে গিয়ে উইকেট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় মোড়ল বাড়ির দুই কিশোরের। উত্তপ্ত হয়ে উঠে ওই গ্রাম। তখনকার মতো পুলিশ গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

অভিযোগ, সোমবার সকালে মোড়ল পরিবারের লোকজন কুলি যাচ্ছিলেন। সেই সময় ফের মল্লিক পরিবারের লোকজন তাঁদের মারধর করেন। রাজা শেখ নামে এক জন গুরুতর জখম হন। ওই দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষই গ্রামের ওই মাঠে বোমাবাজি শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, “ছোটদের খেলার মাঠে কী হয়েছে সেটা নিয়ে মল্লিক পরিবারের লোকজন নাক না গলালে গ্রামে এত বড় ঘটনা ঘটত না।” প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশেরও তাই দাবি।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের আসমহম্মদ শেখ বলেন, “মোড়ল পরিবারের লোকজনেরা ছোটদের ঘটনাকে নিয়ে বোমাবাজি করছে। মল্লিক পরিবারের লোকজনকে মারধর করছে।”

যদিও মোড়ল পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ওই অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি ও এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য আবুসার আলি ওরফে পল্টু বলেন, “গ্রামের সকলেই তৃণমূলের সমর্থক। কিন্তু আমাদের দলেরই একাংশ ওই ঘটনাকে বড় আকার দিয়ে নিজের শক্তি ধরে রাখতে চাইছে। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও জোর করে রাজনীতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

গ্রামের বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, একেবারেই গ্রামের দু’টি পরিবারের ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। পুলিশ জানিয়েছে, সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন