যাত্রী বোঝাই বাস সেতুর রেলিং ভেঙে ভাণ্ডারদহ বিলে পড়ার পরেই প্রশাসন বুঝে গিয়েছিল কী ঘটতে চলেছে। তাদের তরফ থেকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি বার্তা পৌঁছে যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। তাদেরকে তৈরি থাকতে বলা হয়।
এই বার্তা আসার পরেই দ্রুত ময়নাতদন্ত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তার জন্য এসওএস পাঠিয়ে পড়শি জেলা মালদহ থেকে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের দু’জন চিকিৎসক ও একজন ডোমকে ডেকে নেওয়া হয়। কান্দি মহকুমা হাসপাতাল থেকেও দু’জন ডোমকে ডেকে নেওয়া হয়। মোট ৬ জন ডোম, ৫ জন ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, ৬ জন ইন্টার্ণ চিকিৎসককে নিয়ে তৈরি করা হয় ময়নাতদন্তের দল। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ময়না তদন্ত। তার পর থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। ৩৬টি দেহের ময়না তদন্ত করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী এই কাজের প্রশংসা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার চিকিৎসক, নার্স, ডোমদের শাল দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। সোমবার দুপুরের মধ্যে ৪টি দেহ হাসপাতালে এসে যায়। হাসপাতালের সুপার সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ-সহ অন্যান্য দফতর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করায় এমনটা সম্ভব হয়েছে।’’ তিনি জানান, দেহ সনাক্ত, ময়নাতদন্তের জন্য একটি অস্থায়ী মঞ্চ করে পুলিশ, চিকিৎসক-নার্সরা কাগজপত্রের কাজ দ্রুত করেছেন। যার ফলে কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।
ফরেন্সিকের বিভাগীয় প্রধান বিপ্লব শি বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আমার কাছে নতুন নয়। এর আগে জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনা, গাইশালের দুর্ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই সব ঘটনাতেও তিনি ময়না তদন্ত করেছেন।” বহরমপুরের ডোম দিলীপ বাশফোড় কিংবা বাপ্পা হাজরা ২০-২৫ বছর ধরে হাসপাতালে ডোমের কাজ করেন। তাঁরা বলছেন, ‘‘এক দিনে এতগুলো মৃতদেহে ময়না তদন্তের কাজ আগে করিনি।”