টিকা অমিল, জলাতঙ্কে ভুগছে মুর্শিদাবাদ

রাস্তার কুকুরে কামড়েছে মেয়ে শ্যামলী খাতুনকে। জলাতঙ্কের টিকার জন্য মেয়েকে সঙ্গে করে শুক্রবার ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন মা শামসুন্নাহার বিবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর ও ডোমকল শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২৮
Share:

রাস্তার কুকুরে কামড়েছে মেয়ে শ্যামলী খাতুনকে। জলাতঙ্কের টিকার জন্য মেয়েকে সঙ্গে করে শুক্রবার ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন মা শামসুন্নাহার বিবি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ‘জলাতঙ্কের টিকা অমিল’ জানতে পেরে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। শুধু ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নয়, এমন চিত্র গোটা জেলার! যদিও খোলা বাজারে জলাতঙ্কের টিকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সকলের পক্ষে বাজার থেকে চড়া দাম দিয়ে ওই টিকা কেনার সামর্থ্য নেই যাদের, তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

Advertisement

যেমন ডোমকলের শাহাবাজপুরের সামসুন্নাহার বিবি। তিনি বলছেন, ‘‘এর আগে বেশ কয়েকবার হাসপাতাল থেকে ফিরেছি। এ দিনও হাসপাতালে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। পরিচিত এক জন সাহায্য করার ফলে মেয়েকে ওই টিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরে কী করব জানি না!’’ ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রবীর মাণ্ডি অসহায় গলায় বলছেন, ‘‘জলাতঙ্কের টিকা না থাকায় প্রতিদিন রোগী ফিরে যাচ্ছেন। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি।’’

জলাতঙ্কের টিকা সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যে গত কয়েক মাস থেকে জলাতঙ্কের টিকা অমিল। যার জেরে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা সঙ্কট চলছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘যে সংস্থা জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ করে, গত তিন মাস থেকে তারা দিতে পারছে না। গোটা বিষয়টি

Advertisement

স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, জানুয়ারির শেষের দিকে ওই টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে প্রায় ৪ হাজার ইউনিট টিকা লাগে। গত অক্টোবর ও নভেম্বর গত দু’মাস টিকা সরবরাহ করতে পারেনি সরবরাহকারী সংস্থা। ডিসেম্বর মাসেও ৮ হাজার ইউনিট টিকা সরবরাহ করার কথা বলা হলেও তা এখনও পর্যন্ত মেলেনি। যার ফলে জেলাজুড়ে জলাতঙ্কের টিকা’র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, জলাতঙ্কের টিকা এ রাজ্যে উৎপাদন হয় না। সারা দেশে তিন চারটি রাজ্যে তা উৎপাদন হয়। হিমাচল প্রদেশের কসৌলি থেকে এ রাজ্যে জলাতঙ্কের টিকা আসে। যাদের সরবরাহ করার কথা, তারাও কসৌলি থেকে পর্যাপ্ত টিকা পাচ্ছে না। যার ফলে এই টিকার অভাব দেখা দিয়েছে! তবে দ্রুত টিকা মিলবে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।

সম্প্রতি কলকাতায় এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে ১৬টি কুকুর ছানাকে পিটিয়ে মারা নিয়ে সরব হয়েছেন পশুপ্রেমীরা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ জলাতঙ্কের টিকা সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কুকুর ছানাগুলিকে পিটিয়ে মারা ঠিক হয়নি। একই সঙ্গে তাঁরা টিকা সঙ্কট মেটানোরও দাবি তুলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন