Nadia

Nadia: ভিন্ রাজ্যে মৃত্যু হিন্দু যুবকের, দেহ ঘরে ফিরল মুসলিম প্রতিবেশীদের সহায়তায়, হল সৎকার

মহারাষ্ট্রের পুণেতে কাজে গিয়ে ডেঙ্গিতে প্রাণ হারান সঞ্জয় রায়। এক মাত্র ছেলের দেহ কী ভাবে ঘরে ফিরবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন বাবা-মা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পলাশিপাড়া  শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ১৫:০৬
Share:

গ্রামের মুসলমান প্রতিবেশীদের সাহায্যে ঘরে ফিরল হিন্দু যুবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র।

ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় রায়। এক মাত্র সন্তানকে হারিয়ে ভেঙে পড়েন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। কিন্তু মহারাষ্ট্রের পুণে থেকে কী ভাবে ছেলের দেহ ফিরিয়ে আনবেন, সেটাই ভাবিয়ে তুলেছিল পরিবারকে। এই অবস্থায় তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা। সম্প্রীতির অনন্য নজির হয়ে থাকল এই ঘটনা।

Advertisement

পলাশিপাড়া থানার বাগাগোরিয়া মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম। সঞ্জয়ের পরিবার এই গ্রামেই থাকে। গ্রামে এক মাত্র হিন্দু পরিবার তারাই। সঞ্জয়ের বিয়ে হয় কয়েক বছর আগে। তাঁর একটি মেয়ে আছে। পরিবার সূত্রে খবর, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার পুণেতে মারা যান সঞ্জয়। এই খবর গ্রামে পৌঁছতেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসেন এলাকার মুসলিমরা। তাঁরাই ওই দেহ গ্রামে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেন। পুণের ওই এলাকার মসজিদের ইমামদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁরা। একই সঙ্গে গ্রামের মসজিদ থেকে এলাকার মুসলিম মানুষজনের কাছে ওই হিন্দু পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করেন তাঁরা।

মসজিদ থেকে লাউডস্পিকারে এই ঘোষণা হতেই গ্রামের মুসলিম প্রতিবেশীরা যে যার সামর্থ্য নিয়ে জড়ো হন। এমনকি, মহিলারা চাল,সব্জি নিয়ে মসজিদে দান করেন। ভিন্ রাজ্য থেকে প্রতিবেশী যুবকের মরদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ জোগাড় হয় এ ভাবেই।

Advertisement

মৃতের বাবা সুবল রায় বলেন, “ওঁরা পাশে না দাঁড়ালে ছেলের সৎকার করার জন্য গ্রামের শ্মশানে নিয়ে যেতে পারতাম না। ছোট থেকে এঁদের সঙ্গেই বড় হয়েছি। আলাদা করে কোনও ধর্ম বুঝিনি। আজ প্রমাণ হয়ে গেল, ধর্মে নয়, সম্পর্ক হয় আত্মার।”

সঞ্জয়ের প্রতিবেশী আমিনুল ইসলামের কথায়, “ছোট থেকে এক সঙ্গে বড় হয়েছি। বন্ধুকে হারিয়ে মন ভাল নেই। তবুও শেষ কাজ তো করতেই হবে। তাই সবাই মিলে এগিয়ে এলাম। আমাদের একটাই ধর্ম— মানবতা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন