কাটমানি ও দুর্নীতি নিয়ে পদ্ম-বিক্ষোভ

বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল  এত দিন ধরে ক্ষমতায় থাকলেও চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান নবদ্বীপের বিশেষ উন্নতি কিছু হয়নি। বরং পুরসভার মালিকানাধীন সম্পত্তি পরিকল্পনাহীন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০৪:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

দলের একাংশ নাকি চাননি। তবুও মঙ্গলবার নবদ্বীপ পুরসভার সামনে মণ্ডপ বেঁধে কাটমানি এবং পুরবোর্ডের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দিনভর অবস্থান বিক্ষোভ করল বিজেপির যুবমোর্চা। টানা কুড়ি বছর তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ চলে। দলের নদিয়া উত্তর সাংঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার-সহ বেশ কিছু নেতানেত্রী উপস্থিত ছিলেন। দলেরই একাংশের মতে, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জেলা নেতৃত্বের সক্রিয় উপস্থিতির আসল কারণ সম্প্রতি নবদ্বীপে দলের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সামাল দেওয়া।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটে নবদ্বীপ পুর এলাকায় বিজেপি ভাল ফল করার পর থেকেই নানা কর্মসূচি নেওয়া শুরু হয়েছে। ফল প্রকাশের দু’দিনের মাথায় এবিভিপি নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। কারণে-অকারণে বিক্ষোভ, অবস্থান, থানা ঘেরাও, পথ অবরোধ, কিছুই বাদ যাচ্ছে না। কয়েক দিন আগেই নবদ্বীপ ব্লকের স্বরূপগঞ্জে কৃষ্ণ দেবনাথ নামে এক যুবক খুন হওয়াকে নিয়ে রাম-রাজনীতি তুঙ্গে নিয়ে যায় যারা। আপাতত তাদের অন্যতম নিশানা নবদ্বীপ পুরসভা।

বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল এত দিন ধরে ক্ষমতায় থাকলেও চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান নবদ্বীপের বিশেষ উন্নতি কিছু হয়নি। বরং পুরসভার মালিকানাধীন সম্পত্তি পরিকল্পনাহীন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। গঙ্গা দূষণ রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত টাকা আসা সত্ত্বেও কাজের কাজ বিশেষ হয়নি। উল্টে বালির কারবারের রমরমা।

Advertisement

সারা পৃথিবী থেকে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীরা এলেও কোন পরিকল্পিত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি পুরসভা। ‘হেরিটেজ সিটি’র নামে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। ক্রমাগত উন্নয়ন কর বৃদ্ধি সত্ত্বেও পানীয় জল ও নিকাশির সমস্যাও রয়েছে। বর্তমান পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, দলীয় কর্মীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগেও সরব হয়েছেন নেতারা। পরে পুরপ্রধানের কাছে ১৫ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসে কিন্তু বারবারই পুরপ্রধানের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপির প্রতিনিধিরা। পরে মহাদেব সরকার অভিযোগ করেন, “উন্নয়নের টাকা থেকে-কোটি কোটি টাকা কাটমানি খাওয়া হয়েছে। উন্নয়ন হয়নি, হয়েছে দুর্নীতি। পুরপ্রধান কোন অভিযোগেরই স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। কৌশল করে এড়িয়ে গিয়েছেন। আমাদের দাবি, কাটমানি ফেরত দিতে হবে।”

তবে পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “একটি অভিযোগের প্রমাণও ওঁরা দেখাতে পারেননি। পুরসভায় কোনও দুর্নীতি হয়নি, কেউ কাটমানিও খায়নি। আর পুরসভা কী কাজ করেছে তার যাবতীয় তথ্য আমরাই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। তাতেই সব জবাব মিলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন