Murshidabad Unrest

ক্ষৌরকার বা ব্রাহ্মণ মিলল না মুর্শিদাবাদে নিহত বাবা-ছেলের শ্রাদ্ধে! দাবি, ‘ভয়ে কেউ আসেনি’

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। হিংসা ছড়িয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। গত ১২ এপ্রিল সেই হিংসায় প্রাণ গিয়েছে বাবা এবং ছেলের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৫
Share:

মুর্শিদাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের শোকস্তব্ধ পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে নিহত বাবা এবং ছেলের আদ্যশ্রাদ্ধ ছিল বুধবার। অভিযোগ, পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের জন্য কোনও ক্ষৌরকার বা ব্রাহ্মণকে পায়নি তাঁদের পরিবার। নিজেদের মতো করেই কোনও রকমে কাজ সেরেছেন। দাবি, ভয়ে তাঁদের বাড়িতে কেউ আসতে চাননি।

Advertisement

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। হিংসা ছড়িয়েছে জঙ্গিপুরের শমসেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ানের মতো অঞ্চলে। গত ১২ এপ্রিল, শনিবার এই অশান্তিতে প্রাণ হারান শমসেরগঞ্জের হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর পুত্র চন্দন দাস। অভিযোগ, তাঁদের খুন করা হয়েছে। অপঘাতে মৃত্যু হওয়ার কারণে নিয়ম অনুযায়ী তিন দিনের মাথায় পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম সেরে ফেলার কথা। বুধবার তার আয়োজন করেছিল শোকস্তব্ধ পরিবারটি।

নিহতদের পরিবার জানিয়েছে, তাঁদের এলাকায় তিন জন ক্ষৌরকার এবং দু’জন ব্রাহ্মণ রয়েছেন। শ্রাদ্ধের কাজের জন্য তাঁদের কাছে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু ফিরে আসতে হয়েছে খালি হাতে। ক্ষৌরকারদের তরফে জানানো হয়েছে, এই সংক্রান্ত কাজের জন্য যে জিনিসপত্র লাগে, তা তাঁদের কাছে এই মুহূর্তে নেই। তাই পারলৌকিক কাজ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া, দুই ব্রাহ্মণই জানিয়ে দিয়েছেন, এই ঘটনা নিয়ে থানাপুলিশ হয়েছে এবং মামলা চলছে। তাই তাঁরা এই সংক্রান্ত কাজ করতে পারবেন না।

Advertisement

বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বিষয়টি জানেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নিহতদের পরিবার ক্ষৌরকার বা ব্রাহ্মণ পায়নি। ভয়ে কেউ সেখানে যেতে চায়নি।’’ এ ছাড়া, স্থানীয় বিজেপি নেতা গৌরীশঙ্কর ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওই এলাকায় তো অনেকেই ঘরছাড়া। কী হয়েছে না হয়েছে, খোঁজ না নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’’

মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বাবা-ছেলের এই খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদের সুতি ও বীরভূমের মুরারই থানা এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। তবে হরগোবিন্দ এবং চন্দনের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ নিতে চান না। দোষীদের কঠোর শাস্তি চান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement