সেনাবাহিনীতে কাজ করে ছেলে। ছুটিতে বাড়ি এসেছিল। এক দিন মেলায় বেড়াতে যায়। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফেরেনি। পরের দিনই বাড়ির লোকজন ধুবুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
কিন্তু দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ এনে বুধবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেলেন নিখোঁজ ওই জওয়ানের আত্মীয়স্বজন। বুধবার ধুবুলিয়ার বাহাদুরপুরে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অবরোধের জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রবল যানজট দেখা দেয়। পরে ধুবুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।
নিখোঁজ জওয়ানের নাম প্রসেনজিৎ ঘোষ। তাঁর বাড়ি ধুবুলিয়ার বাহাদুরপুরে। ২০১৩ সালে তিনি বিএসএফে চাকরি পান। বর্তমানে কাশ্মীরে কর্মরত ছিলেন। ১৫ অগস্ট ছুটিতে বাড়ি ফেরেন। ১৭ অগস্ট তাঁর বন্ধু ওই গ্রামেরই প্রসেনজিত ঘোষের সাথে বর্ধমানের পূর্বস্থলীর জাহাননগরে মনসা পুজোর মেলা দেখতে যান। সে দিন বিকেলের পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি প্রসেনজিতের। বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল ফোনও। বন্ধু প্রসেনজিত সে দিন রাতে বাড়ি ফিরলেও বিএসএফ জওয়ান বাড়ি ফিরেনি। পরের দিন ধুবুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবারের লোকজন। পরে তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করলে পুলিশ প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করে। প্রসেনজিৎ সাত দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে গিয়েছে।
নিখোঁজ জওয়ানের মামা তারক ঘোষের দাবি, ‘‘গত ১৪-১৫দিন ধরে আমার ভাগ্নে নিখোঁজ। আমরা অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও ভাগ্নের খোঁজ দিতে পারল না।’’ তাঁর বক্তব্য, গ্রামের ওই ছেলেটির সঙ্গেই তো গিয়েছিল প্রসেনজিৎ। তা হলে তাকে জেরা করে কেন কিছু জানা যাচ্ছে না! ‘‘ও সব বলতে পারবে। তবু পুলিশ ওর কাছ থেকে কিছু বের করতে পারল না,’’ বলেন তিনি।
যদিও পুলিশের দাবি, অবরোধকারীদের অভিযোগ ঠিক নয়। তদন্ত ঠিক পথেই চলছে। তা ছাড়া প্রসেনজিতের মোবাইল লোকেশন ধরে খোঁজ করা হচ্ছে। জেরা করা হয়েছে অভিযুক্তকেও। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রশ্নের মুখে সে দাবি
করেছে, মেলা থেকে ফেরার পথে নবদ্বীপের হুলোর ঘাটের কাছে ভিড়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় দু’জন। তার পর আর দেখা হয়নি। ধৃতের বক্তব্য, যে হেতু তার সঙ্গে মেলায় গিয়েছিল প্রসেনজিৎ, তাই তাকেই দোষী ঠাওড়ানো হচ্ছে। কিন্তু তিনি নির্দোষ।