দুর্নীতির অভিযোগে ‘ক্লোজ’ করা হল নবগ্রাম থানার ওসি সুব্রত সিকদারকে। সম্প্রতি ওসির পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এবং ও থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ওই ওসির মদতে তোলাবাজি চলছিল বলে অভিযোগ। তিনি তোলাবাজদের আড়াল করতেন বলেও অভিযোগ।
এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ার পর তাঁকে ‘ক্লোজড’ করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান। সাগরদিঘি থানার অফিসার জয়দেব সন্ন্যাসীকে আপাতত নবগ্রাম থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য বা জাতীয় সড়কে ট্রাক বা পণ্যবাহী ভারী যানবাহন থামিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে উঠেছে। কিন্তু কিছুদিন আগে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সভায় পুলিশকে এ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, তারপরই জেলা পুলিশের কর্তারা নড়েচড়ে বসেন। তাঁরা খবর পেয়েছিলেন, নবগ্রাম থানার পুলিশের মদতে ওই থানা এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাক থামিয়ে এবং অন্য উপায়ে তোলাবাজি চলছে। এ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপার সম্প্রতি নবগ্রাম থানার ওসি সুব্রতর কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বলে খবর। কিন্তু তারপরও তিনি তোলাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ।
তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ সুব্রতর বদলির পিছনে অন্য কারণও খুঁজে পাচ্ছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জঙ্গিপুরের কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে নবগ্রামের বিডিও অফিসে ঢুকতে ওই ওসি বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
বিরোধী দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তাঁদের উপর পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। ওই সাংসদ নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই কারণেই কি ওই ওসি বদলি, প্রশ্ন উঠছে।
অভিজিৎবাবু জানান, শুধু নবগ্রামের ওসিই নন, তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত খড়গ্রামের তৎকালীন ওসিরও অপসারণ দাবি করে তিনি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত দেরিতে হলেও নবগ্রামের ওই ওসিকে সরানোর ফলে আমাদের অভিযোগ মান্যতা পেল।’’
এ নিয়ে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘ওই ওসিকে ক্লোজড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের তদন্ত চলছে।’’ সুব্রত অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে এদিন মুখ খোলেননি।