সঞ্জীব ঘোষের দ্বারা প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীরা। নিজস্ব চিত্র
ওই মুহূর্তে একটা চাকরির বড় দরকার ছিল তাঁর। মায়ের অসুস্থতার কারণে কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে কালিরহাটের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন অমল দে। স্থানীয় এলাকায় যে কোনও একটা চাকরির সন্ধান করছিলেন ওই মানুষটি। তখনই এক বন্ধুর মুখ থেকে খবরটা পান তিনি।
মাত্র পাঁচ হাজার টাকা খরচ করলেই নাকি মিলবে কাজ!
আর দেরি করেননি ওই যুবক। চলে এসেছিলেন কৃষ্ণনগরে। সঞ্জীব ঘোষ নামে এক ব্যক্তির হাতে তড়িঘড়ি তুলে দিয়েছিলেন টাকাটা। কিন্তু তার পরে বহুদিন কেটে গেলেও কাঙ্ক্ষিত চাকরির দেখা মেলেনি।
শুক্রবার সেই সঞ্জীব ঘোষকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযোগ, একটি প্রতিষ্ঠিত সংস্থার নামে টাকা তুলে সাধারণকে প্রতারণা করার।
এ দিন জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
ধৃতের বাড়ি হুগলীর চুঁচুড়া এলাকায়। বেশ কয়েক মাস আগে কৃষ্ণনগরে এসে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন অভিযুক্ত। শহর ও তার আশেপাশের এলাকার যুবক-যুবতীদের থেকে একটি ‘গোল্ড লোন’ সংস্থার নাম করে টাকা তুলতে থাকে। প্রতিশ্রুতি দেয়, ওই সংস্থার অধীনে গোষ্ঠী তৈরি করে সাবান, লজেন্স তৈরির কারখানা করে ব্যবসা শুরু করবে। তবে প্রত্যেকের থেকে সংগ্রহ করা টাকার পরিমাণ খুব বেশি ছিল না। অভিযোগ, প্রত্যেকের কাছ থেকে চার থেকে থেকে ছয় হাজার টাকা করে নিতেন ওই অভিযুক্ত।
এখানেই শেষ নয়। সপ্তাহে একদিন করে নানা বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণও দিতেন ওই অভিযুক্ত। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও প্রতিশ্রুতিমতো কোনও কর্মসংস্থান না হওয়ায় মানুষের মনে সন্দেহ হতে শুরু করে। সম্প্রতি তাঁদেরই কয়েক জন কৃষ্ণনগরে ওই সংস্থার দফতরে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, পুরোটাই ভাঁওতা। এর পর তাঁরা পরিকল্পনা করে কৃষ্ণনগরের কাছে সুভাষনগরে অভিযুক্তকে ডেকে এনে আটক করে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ কুড়ি জনের মতো প্রতারিতের সন্ধান পেয়েছে। এমন আরও কত জনকে চাকরির টোপ দেখিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।