জানলা গলে পড়ে ভাঙল পা, চোয়ালও

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ওই রোগী। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ দোতলার জানলা গলে ঝাঁপ দেন তিনি। মাটিতে আছড়ে পড়েন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২৮
Share:

নিজস্ব চিত্র

জঙ্গিপুর হাসপাতালের দোতলার জানলা গলে ঝাঁপ দিয়ে আহত রোগীর অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর ডান পা ভেঙেছে। চোয়ালের হাড়ও ভেঙে গিয়েছে।

Advertisement

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ওই রোগী। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ দোতলার জানলা গলে ঝাঁপ দেন তিনি। মাটিতে আছড়ে পড়েন তিনি। রতন হালদার নামে বছর বত্রিশের ওই যুবকের বাড়ি রঘুনাথগঞ্জের বাসুদেবপুর কলোনিতে। রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়িতে খবর পাঠান। পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে রতন, তাঁর মা এবং দাদাকে বহরমপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রতনের দিদি মালতী হালদার জানান, তাঁর চার ভাইয়ের মধ্যে রতন তৃতীয়। তাঁর একটি তেলেভাজার দোকান রয়েছে। প্রায় তিনি মদ্যপান করে বাড়ি ফিরতেন। গত দু’মাস ধরে মদ্যপানের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে দাদা জীবন হালদারকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন রতন। মালতীর কথায়, ‘‘এরপর হাসপাতালে দাদাকে (জীবন) ভর্তি করতে গিয়ে জানতে পারি ও (রতন) আগেই কীটনাশক খাওয়ার কথা বলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।’’ পরিবারের লোকের সন্দেহ, হাসপাতালের প্রধান গেট দিয়ে বেরনো যাবে না বুঝেই রতন জানলা গলিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাতেই বিপত্তি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল শেখ বুধবার বলেন, ‘হাসপাতাল চত্বরে চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ নজরে এল, দোতলার জানলা ধরে কেউ ঝুলছে। আমরা কয়েকজন চিৎকার করছিলাম। তার মধ্যেই ওই ব্যক্তি ঝাঁপ দেন।’’ রতনকে রাখা হয়েছিল ৪৯ নম্বর শয্যায়। তার পাশের শয্যায় থাকা এক রোগী বলছেন, “ওকে ধরব কি! কাছে গেলেই তো মারতে আসছিল। ভয়ে কাছে যেতে পারিনি। জানলা বন্ধ ছিল। জানলার গ্রিল ভাঙা ছিল। সেখান দিয়ে প্রথমে মাথা গলায় ও। তারপর লাফ দেয়।” মঙ্গলবার রাতে আহত রতন বলেন, ‘‘এত উঁচু বুঝতে পারিনি। জানলা গলে বেরিয়ে এসে দেখি, লাফ মারা যাবে না। শরীর কাঁপছিল। তারপর নীচে পড়ে গেলাম।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালের জানলা গলে রতন বেরোতে পারলেন কী করে! কেনই বা তা কোনও কর্মীর নজরে এল না! বুধবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, ওই ঘরের সমস্ত রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের এক দিকে জানলার গ্রিলের দু’টি লোহার পাত ভাঙা। তবে এদিন সেই জানলা সারানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সুপার সায়ন দাস সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন