বর্ষার আগেই শেষ করতে হবে মাটির কাজ, নাওয়াখাওয়া ভুলেছেন গ্রামের লোকজন

অনশনের পরে এ বার পথে নামলেন বৃদ্ধ

অমরত্বের প্রত্যাশা তিনি করেন না। অন্য কোনও দাবিদাওয়াও তেমন নেই। তাঁর একটাই আর্জি— সাকুল্যে সোয়া দু’কিলোমিটার রাস্তাটা সংস্কার করা হোক।

Advertisement

অনল আবেদিন

আজিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

শুরু: চলে রাস্তা তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

অমরত্বের প্রত্যাশা তিনি করেন না। অন্য কোনও দাবিদাওয়াও তেমন নেই। তাঁর একটাই আর্জি— সাকুল্যে সোয়া দু’কিলোমিটার রাস্তাটা সংস্কার করা হোক।

Advertisement

সাগরদিঘির লালিপলি গ্রামের হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক কান্তিপ্রসাদ মণ্ডল নাগাড়ে সে দাবি জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু সে কথা কানে তোলেনি প্রশাসন। সম্প্রতি সেই পথের দাবিতে টানা ৪৯ দিন অনশন করেছিলেন বছর ষাটেকের কান্তিবাবু।

বৃদ্ধের এমন পদক্ষেপে চাপে পড়ে সাগরদিঘির বিডিও আশ্বাস দেন, সাগরদিঘি ব্লকের আওতায় থাকা দেড় কিলোমিটার রাস্তা কংক্রিট ঢালাই করে দেওয়া হবে। সেই কাজের জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে। কান্তিবাবুও অনশন ভাঙেন।

Advertisement

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় লালিপলি থেকে মুকুন্দবাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বড়নগর পর্যন্ত পৌনে এক কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১০০ দিনের প্রকল্পে মাটির কাজের অনুমোদন আপাতত মিলছে না।

আর অপেক্ষা করেননি কান্তিবাবু। বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তুলে গ্রামের লোকজনকে নিয়ে পথে নেমে পড়েছেন ওই বৃদ্ধ। তাঁর একটাই পণ, ‘‘যে ভাবেই হোক, বর্ষার আগে রাস্তাটা ঠিক করতেই হবে।’’ কাজও চলছে পুরোদমে। একটি জেসিবি ভাড়া করা হয়েছে। সেই মাটি ৪টি ট্রাক্টরে করে নিয়ে গিয়ে ফেলা হচ্ছে রাস্তায়।

দিনভর সেই কাজের দেখভাল করছেন কান্তিবাবু। চড়া রোদে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে কান্তিপ্রসাদ বলছেন, ‘‘বর্ষায় সময় তো আর মাটির কাজ করা যাবে না। তাই কারও ভরসায় না থেকে কাজ শুরু করে দিলাম। দেখি, এর পর পঞ্চায়েত কী করে!’’

মুকুন্দবাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের বাবুলাল সর্দার বলেন, ‘‘১০০ দিনের প্রকল্পে মাটির কাজের আপাতত অনুমোদন মিলছে না। তবে ওই রাস্তায় মাটির কাজ হয়ে গেলে আমরা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সেটি ঢালাই করে দেব।’’ এ বার প্রথম নয়। ওই রাস্তা শেষ সংস্কার করা হয়েছে ২৮ বছর আগে, ১৯৮৯ সালে। সেই কাজটাও কান্তিবাবুর নেতৃত্বেই করেন গ্রামের লোকজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন