ইপিএফ অফিসে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বিড়ি মহল্লা জঙ্গিপুর থেকে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড ফান্ডের অফিস বহরমপুরে সরানোর বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিজেপি ছাড়া রাজ্যের সব প্রধান দলই। সোমবার এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ), জঙ্গিপুরের আঞ্চলিক কমিশনার মধুশ্যাম আর্য জানান, শ্রম মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েই রঘুনাথগঞ্জের মঙ্গলজন থেকে অফিস সরানো হচ্ছে জেলা সদরে। এ দিনই ইপিএফ অফিসের সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। দলের নেতা হুমায়ুন রেজা, আখরুজ্জামান, মইনুল হকেরা হাজির ছিলেন।
অসংগঠিত শ্রমিকদের ইপিএফের আওতায় আনতে মঙ্গলজনে একটি ভাড়াবাড়িতে ২০১০ সালে অফিস খোলা হয়। নিজের সংসদ এলাকায় সেটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই অফিসে এখন শ’খানেক কর্মী কাজ করেন। জঙ্গিপুরে অফিস খোলার মূল উদ্দেশ্য ছিল, এ তল্লাটের প্রায় ছ’লক্ষ বিড়ি শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় আনা। এখন সেটি সরানোর চেষ্টা শুরু হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিরোধ শুরু হয়েছে।
বহরমপুর শহরে অফিস সরানোর জন্য ইতিমধ্যেই বাড়ি পছন্দ করে ফেলা হয়েছে। জঙ্গিপুরের প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসের কমিশনারের ব্যাখ্যা, ‘‘যখন জঙ্গিপুরে অফিস খোলা হয়, বিড়ি শ্রমিকের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লক্ষ। এখন তা সাড়ে আট লক্ষে পৌঁছেছে। পরিকাঠামোর অভাবে ঠির মতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না।’’
প্রণবপুত্র তথা জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, পিএফ অফিস সরানো আটকাতে ইতিমধ্যে তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও শ্রমমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘বিড়ি শ্রমিক মহল্লা থেকে অফিস সরিয়ে বহরমপুরে নিয়ে যাওয়া হলে কোনও কাজে দেড়শো কিলোমিটার যেতে হবে বিড়ি শ্রমিকদের। এক দিনের মজুরির টাকা খরচ করতে হবে। যদি অফিসের পরিকাঠামো বাড়াতে হয়, জঙ্গিপুরে অফিস রেখেও তা করা সম্ভব।’’
গত ৭ সেপ্টেম্বর অরঙ্গাবাদে বিড়ি শ্রমিকদের এক সভায় এই স্থানান্তর যে কোনও মূল্যে রোখার ডাক দেয় সিটুও। সংগঠনের জেলা সভাপতি আবুল হাসনাত খানের বক্তব্য, ‘‘সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা না করে শ্রমমন্ত্রক এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে!’’ বিরোধিতা করছে তৃণমূলও। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। জঙ্গিপুরে ভোটারদের বিরাট অংশ বিড়ি শ্রমিক। সেই হিসেবটাও বোধহয় সব দলের মাথায় রয়েছে। রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী বিড়ি সংস্থার মালিক জাকির হোসেন বলেন, ‘‘অফিস জঙ্গিপুর থেকে চলে গেলে সমস্যায় পড়বেন শ্রমিকেরা। তা হতে দেওয়া যাবে না। ১৮ সেপ্টেম্বর পিএফ অফিসের সামনে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে।’’