কৃষ্ণনগর-লালগোলা-শান্তিপুর

বিগড়ে গেল মালগাড়ি, দিনভর ভুগলেন যাত্রীরা

বরাবর আপ এবং ডাউনের দুটি পৃথক লাইন। রানাঘাট স্টেশন থেকে বেরিয়ে চূর্ণি নদীর সেতুর উপর লাইন সিঙ্গল। সেই লাইনে মালগাড়ির ইঞ্জিন বিগড়ে বৃহস্পতিবার সকালে চূড়ান্ত ভোগান্তি হল তিন লাইনের যাত্রীদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৫
Share:

ট্রেন নেই। কৃষ্ণনগর স্টেশনে যাত্রীদের ভিড়। ছবি: নিজস্ব চিত্র

বরাবর আপ এবং ডাউনের দুটি পৃথক লাইন। রানাঘাট স্টেশন থেকে বেরিয়ে চূর্ণি নদীর সেতুর উপর লাইন সিঙ্গল। সেই লাইনে মালগাড়ির ইঞ্জিন বিগড়ে বৃহস্পতিবার সকালে চূড়ান্ত ভোগান্তি হল তিন লাইনের যাত্রীদের।

Advertisement

কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর এবং লালাগোলা লাইনে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত কোনও ট্রেন চলেনি। ফলে, অফিস যাত্রী, পড়ুয়া-সহ হাজার হাজার যাত্রীর চরম নাকাল হতে হয়। অন্য ইঞ্জিন দিয়ে মালগাড়িটিকে যতক্ষণে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, ততক্ষণে বহু যাত্রী ফিরে গিয়েছেন।

শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫-এ রানাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে রওনা হয় একটি মালগাড়ি। কালীনারায়ণপুর স্টেশনের আগে চূর্ণী নদীর সেতুর কাছে তার ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। তখন কৃষ্ণনগর থেকে ডাউন ট্রেন বীরনগর থেকে কালীনগরের দিকে আসছে। আবার আপ কৃষ্ণনগর লোকালও রানাঘাট স্টেশনে ঢুকে পড়েছে। ট্রেনদুটিকে সেখানেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

কালীনারায়নপুর স্টেশন থেকে একটি লাইন শান্তিপুরের দিকে গিয়েছে। ফলে সেই কোনও ট্রেন শিয়ালদহের দিকে যেতে পারেনি। আবার, শান্তিপুরের দিকে যেতে পারেনি আপ ট্রেনও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা আরও জটিল হয়। একের পর এক আপ লোকাল তখন শান্তিপুর এ কৃষ্ণনগরে যাওয়ার কথা। ৭টা ৫০-এর কৃষ্ণনগর লোকাল তখন রানাঘাটে দাঁড়িয়ে। অন্য লোকালগুলিকে আগের বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়।

রানাঘাট, চাকদহের যাত্রীরা বাস পথে যাওয়ার চেষ্ঠা করেন। ফলে সেই রাস্তাতেও চাপ বাড়ে। তবে কল্যাণী বা কলকাতার যাত্রীদের সেই সুযোগ ছিল না। নিত্যযাত্রীদের অনেকেই ফিরে যান।

বাংলাদেশের বাসিন্দা মিঠু সরকার বছর দুয়েকের ছেলে অঙ্কুশকে নিয়ে এ দেশে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। হাওড়া হয়ে তাঁদের ভেলোরে যাওয়ার কথা। কৃষ্ণনগরে আটকে পড়ে তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। যাত্রীদের ভিড়ে তখন কৃষ্ণনগর স্টেশন যেন সরকারি হাসপাতালের আউটডোর। ট্রেন চলাচল কখন স্বাভাবিক হবে, তাও জানানো হয়নি রেলের পক্ষ থেকে। ফলে যাত্রীদের উৎকণ্ঠা বাড়ে।

কৃষ্ণনগরে তখন একটি লাইনে আপ শিয়ালদহ লোকাল, অন্য লাইনে আপ শিয়ালদহ ভাগীরথী এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে। ফলে, লালগোলার দিক থেকে কোনও ট্রেন কৃষ্ণনগরে ঢুকতে পারেনি। আবার রানাঘাটের আগে আটকে পড়ে লালগোলা প্যাসেঞ্জারও লালগোলার দিকে যেতে পারেনি। মুর্শিদাবাদ, পলাশী, বেথুয়াডহরি থেকে অনেক চাকুরে, পড়ুয়া রোজ কৃষ্ণনগরে আসেন। আটকে পড়েন তাঁরাও। চাপড়ার বাসিন্দা আয়ূব মণ্ডল কল্যাণীতে চাকরি করেন। ট্রেন না চলায় তিনি বাড়ি ফিরে গেলেন। কিন্তু, যাঁদের জরুরী কাজ কলকাতায়, তাঁদের নাকাল হতে হল। কৃষ্ণনগরের মতো অন্য স্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় জমে যায়।

প্রায় দশটা নাগাদ কৃষ্ণনগর থেকে একটি ইঞ্জিন এনে মালগাড়িটিকে বীরনগর স্টেশনে আনা হয়। ১০টা ২০তে কৃষ্ণনগর থেকে ভাগীরথী এক্সপ্রেস শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা হয়। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে দুপুর গড়িয়ে যায়। রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দেরিতে চললেও, কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement