Crime

ব্যক্তিগত আক্রোশেই কি খুন!

কিন্তু িচরঞ্জিতের জন্য কোথায় জায়গা হারাচ্ছিলেন বলে সুমন মনে করছিলেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৮:৪৬
Share:

ফাইল চিত্র

গভীর রাতে গুলি করে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (৩২) নামে এক যুবককে খুন করার ঘটনায় অভিযোগের ফাঁস ক্রমেই চেপে বসছে সুমন রায়ের উপরেই। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, চিরঞ্জিতের প্রতি সুমনের হিংসা, রাগ, ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত চিরঞ্জিতকে খুন করেই সেই রাগ ক্ষোভ মিটিয়েছে সুমন। বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘চিরঞ্জিতের কারণে সুমন তার জায়গা হারাচ্ছে এমনটা ভাবতে শুরু করেছিল। সে জন্য তাঁর প্রতি সুমনের হিংসা রাগ তৈরি হয়েছিল। আর সে জন্য সুমন তাঁকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘আমরা অভিযুক্তের বক্তব্য যাচাই করে দেখছি।’’ মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার রাতে দফায় দফায় খুনের ঘটনায় ধৃত সুমন রায়কে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারী। পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদবও অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

Advertisement

কিন্তু িচরঞ্জিতের জন্য কোথায় জায়গা হারাচ্ছিলেন বলে সুমন মনে করছিলেন? জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, শহর তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী ছিলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। অন্য দিকে ধৃত সুমনেরও নাডুগোপালবাবুর সঙ্গে ওঠাবসা ছিল। প্রায় ১৪ দিন আগে নাড়ুগোপালবাবু সুমনকে তাঁর কাছে আসতে নিষেধ করেন। অভিযোগ, তখন থেকেই সুমনের চিরঞ্জিতের উপর রাগ তৈরি হয়। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ধৃত সুমনের মোবাইলের মেসেঞ্জার পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন থেকে চিরঞ্জিতের প্রতি সুমনের রাগ ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সে কথা সে পুলিশের কাছেও স্বীকার করেছে।

তবে নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুমন আমাদের দলের কেউ নয়। প্রতিবেশী হিসেবে তার আমার বাড়িতে যাতায়াত ছিল। কিন্তু তার কার্যকলাপ ভাল নয় দেখে ওকে আমার কাছে আসতে নিষেধ করি।’’ তবে সুমনের কী ধরনের কার্যকলাপ খারাপ তা খোলসা করেননি নাড়ুগোপালবাবু। বৃহস্পতিবারও নাড়ুগোপাল বলেন, ‘‘বেশ কয়েক মাস ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সম্ভবত লক্ষ্য ছিলাম আমি। কিন্তু আমার কাছে আসতে না পেরে ভাল ছেলে চিরঞ্জিতকে এ ভাবে সরিয়ে দিল। আমি, চাই ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’

Advertisement

ইতিমধ্যে কংগ্রেস দাবি করেছে, শহরে এই খুন তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে হয়েছে। তৃণমূলের অন্দরেরও খবর, বহরমপুর শহরে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে। বিবাদমান গোষ্ঠীর কোন্দল বেশ কয়েক বার প্রকাশ্যে এসেছে। তবে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘আমাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। খুনি গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে কে ওই খুনির পিছনে রয়েছে।’’

চিরঞ্জিতের খুন নিয়ে মুখ খুলেছেন বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য। তিনি বলেন, ‘‘চিরঞ্জিত বহরমপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী ছিল। ও খুবই ভাল ছেলে। ওকে যে বা যারা খুন করেছে তাদের দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন