সুতিতে ধৃত তিন আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে সুতির পুলিশ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে মানিকপুর মোড় থেকে তিন বাইক আরোহীকে গ্রেফতার করে। বাইকে থাকা দু’টি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ১০টি নাইনএমএম পিস্তল ও ৩০ রাউন্ড গুলি।
ধৃত আব্দুল আজিজ ওরফে বদি সেখ, লতিফ সেখ ও নওয়াজ শরিফ সকলেই সমশেরগঞ্জের হাউসনগরের বাসিন্দা। পুলিশের জেরায় ওই তিন যুবক জানিয়েছে, ফরাক্কার অর্জুনপুরের এক যুবকের কাছ থেকে তারা ওই আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছে। প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্র ২০ হাজার টাকা করে বিক্রি করার কথা ছিল তাদের। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও তারা এই আগ্নেয়াস্ত্রের লেনদেন করেছে। অর্জুনপুরের ওই যুবকের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া পিস্তলগুলির গায়ে বিদেশি স্টিকার মারা থাকলেও সেগুলি এলাকাতেই তৈরি হয়েছে। সামশেরগঞ্জ এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের এই কারবার চলছে বহু দিন থেকেই। গত বছর জুন মাসে হাউসনগরের পাশেই দোগাছি গ্রামের আনারুল হক নামে এক ব্যক্তি মালদহে ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১০টি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন ও ৫০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ।
ধুলিয়ান লাগোয়া চর শবদলপুরে মাস ছয়েক আগে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির একটি কারখানার খোঁজ পেয়েছিল বিএসএফ। মইদুল শেখ নামে এক যুবকের বাড়িতে হানা দেয় তারা। উদ্ধার হয় ১০টি পিস্তল। মইদুলের বাড়ি থেকেই আটক করা হয় রব্বুল শেখ নামে এক তরুণকে। সে ওই বাড়িতেই মইদুলের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করত।
বিএসএফের দাবি, মইদুল এলাকায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে পরিচিত। ভাগলপুরেও যাতায়াত ছিল তার। সেখান থেকেই যন্ত্রাংশ কিনে এনে নিজের বাড়িতেই পিস্তল তৈরি করত সে। তারপর তৈরি পিস্তল বিভিন্ন জায়গায় পাঠাত সে। বাড়ি থেকে তার যাতায়াতের প্রধান রাস্তাই ছিল ধুলিয়ান ফেরিঘাট। তাই সামশেরগঞ্জ এলাকার দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষ্ণবনগর থানার মধ্যে পড়লেও চরের গ্রামগুলিতে যাতায়াতের সহজ রাস্তা হল ধুলিয়ান ফেরিঘাট। সহজে যাওয়া যায় ঝাড়খণ্ডেও। সুতিতে ধরা পড়া অস্ত্রগুলি অর্জুনপুরের যার কাছ থেকে আনা হয়েছিল বলে ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, ফরাক্কা এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারি হিসেবে এক ডাকে তাকে চেনে সবাই। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে মূল পাণ্ডাকে ধরতে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’