ছেঁড়া ব্যাগেই আট লক্ষ জাল টাকা

পুলিশ জানিয়েছে, একটি ছেঁড়া ব্যাগের মধ্যে চারটি বান্ডিলে রাখা ছিল চারশোটি জাল দু’হাজার টাকার নোট। কথা ছিল, জিগরির মোড়ে ঝাড়খন্ডের বারহারোয়া থেকে এক কারবারি সেই জাল টাকা নিতে আসবে। সেই মতোই বাসে করে ভরদুপুরে জাল নোট নিয়ে নামে তারা।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০২:১৬
Share:

উদ্ধার হওয়া জালনোট। নিজস্ব চিত্র

অত্যন্ত জীর্ণ একটি ব্যাগ। বেশ কয়েক জায়গায় তাপ্পি মারা। বুধবার দুপুরে সেই ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে পড়ল আট লক্ষ টাকার জাল নোট। ঘটনাস্থল ফরাক্কা।

Advertisement

ঠিক এক মাস আগে, ১১ জুন এই ফরাক্কাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ও জাল টাকা-সহ মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা মোক্তাজুল শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তবে বুধবার পুলিশ দু’জনকে পাকড়াও করলেও ঝাড়খণ্ডের এক কারবারিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। ধৃত মুকলেশুর রহমানের বাড়ি বৈষ্ণবনগরের পারদেওনাপুরে। অন্য জন, আলম শেখ ফরাক্কার চর সুজাপুরের বাসিন্দা।

Advertisement

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ধৃত দু’জনেই দীর্ঘ দিন ধরেই জাল নোটের কারবারে জড়িত। তাদের সঙ্গে আর কারা এই চক্রে জড়িত তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

পুলিশ জানিয়েছে, একটি ছেঁড়া ব্যাগের মধ্যে চারটি বান্ডিলে রাখা ছিল চারশোটি জাল দু’হাজার টাকার নোট। কথা ছিল, জিগরির মোড়ে ঝাড়খন্ডের বারহারোয়া থেকে এক কারবারি সেই জাল টাকা নিতে আসবে। সেই মতোই বাসে করে ভরদুপুরে জাল নোট নিয়ে নামে তারা। পুলিশের কাছে খবর ছিল। সেই মতো দু’জনকে ধরে ফেলে। তবে ঝাড়খণ্ডের কারবারির নাগাল পায়নি।

জাল নোট উদ্ধারের ঘটনা ফরাক্কায় নতুন কিছু নয়। তবে নোট বাতিলের পরে ফরাক্কায় এই বিরাট অঙ্কের জাল টাকা এ দিন প্রথম উদ্ধার হল বলে দাবি পুলিশের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, জাল নোটের কারবারিরা ফরাক্কাকে ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। গত ২ এপ্রিলও এমনই ভরদুপুরে ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি মোটরবাইক আটকায় পুলিশ। বাইকের বাক্স থেকে মেলে সাত লক্ষ টাকার জাল নোট। সবগুলো ছিল দু’হাজার টাকার নোট। গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের বাসিন্দা আজিমুদ্দিন শেখকে। কালিয়াচক থেকে সে ওই জাল নোট নিয়ে ঝাড়খণ্ডে ফিরছিল। আজিমুদ্দিনও পুলিশের তালিকায় ছিল ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’।

জানুয়ারিতেও সুতির আহিরণ থেকে আট লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়। গ্রেফতার হয় রাকিবুল শেখ ওরফে কাউসার। তার বাড়ি বাংলাদেশের শিবগঞ্জের চর হাসানপুরে। বছর দু’য়েক থেকে মুর্শিদাবাদের রানিনগরের চর খেজুরপাড়া এলাকায় থেকে সেখান থেকেই কারবার চালাচ্ছিল।

কিন্তু জাল নোটের কারবারে পাচারকারীরা বর্তমানে ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ ও সুতি থানাকে বেছে নিচ্ছে কেন? পুলিশের মতে, এই তিন থানার পূর্বে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বৈষ্ণবনগর, পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড, বীরভূম। পাশে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে অতি সহজেই কালিয়াচকের জাল নোট ঢুকে পড়ছে ফরাক্কা, সুতি ও শমসেরগঞ্জে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন