Murder

Murder: কাকার বুকে গুলি করে দেবাশিসই, খুনের ঘটনায় ধৃত আরও এক

শুক্রবার সন্ধ্যায় গয়েশপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নবারুণ সঙ্ঘের মোড়ের কাছে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী, বছর পঁয়ষট্টির জনার্দন কর্মকার খুন হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গয়েশপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৭:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুটারের পিছনে বসে পুলিশ কনস্টেবল দেবাশিস কর্মকারই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে তাঁর কাকাকে খুন করেছেন বলে দাবি পুলিশের। যদিও কখন তিনি তাঁর কর্মস্থল, বিধাননগরের আরক্ষা ভবন থেকে এসে খুন করে আবার সেখানে ফিরে গেলেন, তা নিয়ে কিছু প্রশ্নও রয়েছে।

Advertisement

ইতিমধ্যে গয়েশপুরে প্রাক্তন পুলিশকর্মী জনার্দন কর্মকারকে খুনের ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে-ই স্কুটার চালাচ্ছিল বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনায় আগেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোমবার আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সানি প্রসাদ, বয়স বছর উনিশ। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় সুবোধ সরণী এলাকায়। দেবাশিসকে পিছনে বসিয়ে সে-ই স্কুটার চালাচ্ছিল। আজ, মঙ্গলবার তাকে কল্যাণী আদালতে হাজির করানোর কথা রয়েছে।

যে দু’জনকে আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার মধ্যে দেবাশিস ছাড়াও রয়েছে তাঁদের পৈতৃক বাড়ির খরিদ্দার অভিজিৎ ভট্টাচার্য। তবে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে দু’জনকে জেরা করার পরেই পুলিশ বুঝে যায় যে অভিজিতের সঙ্গে ঘটনার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। বরং দেবাশিসকে নিয়েই তারা বেশি মাথা ঘামাচ্ছিল। পুলিশের দাবি, জেরায় সে খুনের কথা কবুল করেছে। পুলিশের দাবি, তবে যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল তা রাত পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। তবে সেটি পুলিশের ব্যবহার্য সার্ভিস রিভলভার নয় বলেই জেরায় জেনেছে পুলিশ। স্কুটারটি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

Advertisement

গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ গয়েশপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নবারুণ সঙ্ঘের মোড়ের কাছে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী, বছর পঁয়ষট্টির জনার্দন কর্মকার খুন হন। ভরসন্ধ্যায় বাড়ির সামনেই তাঁর বুকে পর পর দু’টি গুলি করে স্কুটারে চম্পট দেয় দু’জন। গুলির শব্দে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের চলে যেতে দেখতে পান। পরে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজেও দু’জনকে স্কুটারে যেতে দেখা য়ায়। চালকের মাথায় হেলমেট ছিল না, তবে মুখে মাস্ক ছিল। পিছনে বসা আরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল। পুলিশের দাবি, মাস্ক পরা লোকটি সানি এবং তার পিছনে বসা আরোহীই দেবাশিস।

সে দিন স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছিল, পৈতৃক একটি বাড়ি নিয়ে জেঠা জনার্দন কর্মকারের সঙ্গে অশান্তি চলছিল দেবাশিসের। গয়েশপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের কাছে সে বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিল। সেই নিয়ে আপত্তি তুলে জনার্দন মামলাও করেন। গত ১৭ মে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এই নিয়ে দু’পক্ষের বৈঠকও হয়। কিন্তু মামলা চলায় আপস রফা কিছু হয়নি।

পুলিশ জানায়, ওই রাতে দেবাশিস বিধাননগরে আরক্ষা ভবনে ছিল। শনিবার ভোরে তাকে কল্যাণীতে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়। দেবাশিস নিজেও ফোনে দাবি করেছিল, সে আরক্ষা ভবনে কর্মরত রয়েছে। তবে সে গয়েশপুরে কখন এসেছিল? জনার্দন অভ্যাস মতো কুকুরকে বিস্কুট খাওয়াতে বেরোবেন জেনে কোথায় তারা ওত পেতে ছিল? তার পর কোথায় সে আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় লুকিয়ে রাখল? কখনই বা সে বিধাননগরে ফিরে গেল? পুলিশের দাবি, ওই দিনই দুপুর নাগাদ বিধাননগর থেকে বেরিয়ে খুন করে আবার ফিরে যায় দেবাশিস। স্কুটারটা তার নিজের। যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সে গুলি চালিয়েছিল, সেটি কোথায় রেখেছে তা-ও সে পুলিশকে দেখিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন