যোগ অভ্যাস করছেন পুলিশকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের স্তব্ধতায় আর যাই হোক পুলিশের ব্যস্ততায় ভাঁটা পড়েনি বলেই মনে করছেন জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ওয়াই রঘুবংশী। বরং করোনার ছায়ায় প্রলম্বিত লকডাউনের বয়স আড়াই মাস ছোঁয়ার পরে আনলক পর্বে কিঞ্চিৎ শিথিল হতেই নতুন করে সংক্রমণ শুরু হওয়ায় পুলিশের নজরদারি আরও বেড়েছে বলেই মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। নিরন্তর এই নজরদারির দায় সামলাতে গিয়ে তাই পুলিশকর্মীদের শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে যোগ ব্যায়ামকেই হাতিয়ার করতে চায় এই পুলিশ জেলা। মঙ্গলবার থেকে যার মহড়া শুরু হল সুতি থানায়। জেলা পুলিশের খবর, এর পরেই যোগের নিয়মে বসতে হবে শমসেরগঞ্জে এবং তার পর সাগরদিঘি থানার পুলিশ কর্মীদের।
এই দীর্ঘ লকডাউনে চেনা কাজের সঙ্গে ‘অচেনা’ দায়িত্বও তো কম পালন করতে হয়নি পুলিশ কর্মীদের। মানসিক ভাবে নিজেকে পোক্ত থাকাও এ সময়ে জরুরি বলেই মনে করা হচ্ছে তাই। সে ক্ষেত্রেও যোগ অভ্যাস অবশ্যম্ভাবী দাওয়াই বলেই মনে করছেন পুলিশ জেলার সুপার।
রঘুবংশী বলেন, “পুলিশ কর্মীরা করোনার প্রথম সারির যোদ্ধা। তাঁদের ফিট থাকাটা জরুরি। তাতে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। মানসিক ভাবেও চাঙ্গা থাকবেন তাঁরা। লকডাউনের অবসাদ গ্রাস করবে না। তাই এই যোগ শিবির।’’ শুধু যোগ ব্যায়াম নয়, খেলাধুলো, দৌড়-ঝাঁপ যেভাবেই হোক প্রতি দিন তা করতে পারলে অনেকটাই সুস্থ থাকা যাবে বলে পুলিশ কর্তাদের অভিমত।
ইতিমধ্যেই জঙ্গিপুর পুলিশ লাইন, শমসেরগঞ্জ-সহ কয়েকটি থানায় বেশ কয়েকজন সিভিক ও পুলিশ কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। ফলে তাদের সংস্পর্শে কাজ করা অন্য পুলিশ কর্মী-অফিসারদের মধ্যে ভয় কখনও বা দীর্ঘ দিন ছুটি না পাওয়ায় অবসাদও কাজ করছে বলে মনে করছেন জেলা কর্তারা। সেই চাপা দুশ্চিন্তা এবং আতঙ্ক কাটাতে যোগ অভ্যাস অনেকটা সাহায্য করবে বলে মনে করেন মনোবিদেরাও। পরিচিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অচিন্ত্য পাল চৌধুরীর কথায়, ‘‘যোগ অভ্যাস সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়ত বাড়ায় না, তবে শরীর সুস্থ তো রাখে। তা ছাড়া এই আবহে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকাটাও খুব জরুরি। তাই যোগ অভ্যাস প্রয়োজনীয় তো বটেই।’’
সুতি থানায় এ দিন জনা ৩০ পুলিশ কর্মী এক সঙ্গে যোগ অভ্যাসে নামেন। সময়, সকাল ৭টা থেকে ৮ টা। সুতির থানার ওসি বিপ্লব কর্মকার বলেন, ‘‘প্রতি সপ্তাহে দু’দিন প্রশিক্ষকেরা আসবেন। বাকি ৫দিন নিজেরাই সেই মত যোগ অভ্যাস করা হবে।’’