তাহেরপুরে গির্জায় তাণ্ডবে এখনও অধরা অভিযুক্তেরা

তাহেরপুরের গির্জায় ঢুকে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চালানোর ঘটনার তিন দিন পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাহেরপুরের সেন্ট টমাস ক্যাথলিক চার্চে ঢুকে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। রানাঘাট-কাণ্ডের জের মিটতে না মিটতেই ফের এমন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ০১:০৭
Share:

হামলার পরে। — ফাইল চিত্র।

তাহেরপুরের গির্জায় ঢুকে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চালানোর ঘটনার তিন দিন পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাহেরপুরের সেন্ট টমাস ক্যাথলিক চার্চে ঢুকে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। রানাঘাট-কাণ্ডের জের মিটতে না মিটতেই ফের এমন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ সক্রিয় থাকলে এই ধরণের ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যেত। নদিয়ার পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ওই গির্জা থেকে কোনও জিনিস খোয়া যায়নি। তবে গির্জার ভিতরে ঢুকে কাগজপত্রের পাশাপাশি বহু জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে দুষ্কৃতীরা। বাইরেও বেশ কিছু জিনিসপত্র ফেলে রেখে যায়। শুক্রবার ভোরে বিষয়টি নজরে আসে গির্জা দেখভালের দায়িত্বে থাকা তপন মণ্ডলের। ঘটনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। তাঁরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ঘটনার পরে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। কী রকম? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা দরজা ভেঙে ঢোকেনি। তাহলে তারা ঢুকল কোন দিক দিয়ে? কোনও জিনিসও খোয়া যায়নি। তাহলে দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য কী ছিল? সোনালি রঙের যে জিনিসটি দুষ্কৃতীরা যাওয়ার সময় ফেলে দিয়ে গিয়েছে। সেটাকে কি তারা সোনা ভেবেছিল? এ রকম বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। কথা বলা হচ্ছে গির্জা দেখভালের দায়িত্বে থাকা তপনবাবুর সঙ্গেও।’’

Advertisement

তাহেরপুরে খ্রিস্টানপাড়ার ওই গির্জার বয়স কমবেশি আশি বছর। আগে গির্জাটি ওই গ্রামের অন্য জায়গায় ছিল। ২০০০ সালে এই জায়গায় নতুন করে গড়ে তোলা হয়। উপাসনা গৃহ, আবাসন, চিকিৎসালয়, খেলার মাঠও রয়েছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে উপাসনা গৃহে রং করা, পাথর বসানোর কাজ করা হয়। কয়েকদিন আগে এখানে দাতব্য চিকিৎসালয়ও চালু হয়েছে। ওই গির্জার ফাদার রেভারেন্ড সতীশ বলেন, ‘‘পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে। আমরা সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’

রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই খ্রিস্টানপাড়ার অনেকেই কর্মসূত্রে ভিন্‌দেশে থাকে। ঘটনার কথা জানতে পেরে তাঁরা বারবার ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন। গির্জার ফাদার ও গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত চার্চ কাউন্সিলের সদস্য শচীন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সকলেই ফোন করে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইছেন। আসলে রানাঘাটের ঘটনা তো এখনও কারও মন থেকে ফিকে হয়নি।’’ তাহেরপুর শাখার সম্পাদক জন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গা থেকে সিস্টার, ফাদাররাও আমাকে ফোন করছেন।’’

স্থানীয় বিধায়ক তথা রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আমি ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। গির্জা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাঁরা প্রশাসনের উপর আস্থা রাখছেন।’’

পার্থবাবু বলেন, ‘‘ কোনও ভাবেই এই ধরনের ঘটনাকে বরদাস্ত করা হবে না। যারাই ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকুক পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’’

ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু। রবিবার বিকেলে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক কিশোরের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পার্থ দাস (১১)। তার বাড়ি সাগরদিঘির উজ্জ্বলনগর। এ দিন বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে মণিগ্রামের তালতলা মোড়ের কাছে একটি ট্রাক পিছন থেকে এসে পার্থকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই কিশোর। পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন