যন্ত্রে চোখ। নিজস্ব চিত্র
চার প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে টনক নড়ল পুলিশের। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ছুটে চলা গাড়ির গতি মাপতে নামানো হল ‘লেজার স্পিড গান’। প্রথম দিনের পয়লা ঘণ্টায় গতির ফেরে আটক হল ৩২টি গাড়ি। যার মধ্যে আবার চারটি অ্যাম্বুল্যান্স। যন্ত্রে ধরা পড়ল, তারা ছুটছিল গণ্টায় ৮০ কিমির বেশি গতিতে।
শুক্রবার এমনই একটি দ্রুতগতির অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে লরির মুখোমুখি ধাক্কায় জীবন্ত দগ্ধ হয়েছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের দুই কর্মী-সহ তিন জন। প্রাণ গিয়েছিল আরও একজনের। বলা বাহুল্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ বা গাড়ির গতি মাপার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। রবিবার গতি মাপার ব্যবস্থা শুরু করল রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। তারা জানিয়েছে, এ বার থেকে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় যন্ত্র বসিয়ে গতি মাপা হবে।
শুক্রবার যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, রবিবার তার থেকে কিছু দূরে অজগরপাড়ার কাছে রবিবারের এই পুলিশি অভিযানে হাজির ছিলেন জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রবীণ প্রকাশ নিজেই। এক ঘন্টাতে পাকড়াও হল চারটি লরি, একটি যাত্রী বোঝাই বাস, ছ’টি পিকআপ ভ্যান, সাতটি মোটরবাইক, ১০টি ছোট গাড়ি ছাড়াও চার চারটি অ্যাম্বুলেন্স। সব গাড়িকেই কেস দেওয়া হয়।
রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈকত রায় বলেন, “লেজার স্পিড গানে আটক গাড়িগুলির গতি ছিল ঘণ্টায় ৭৫-৯১ কিমি। জাতীয় সড়কে সর্বোচ্চ গতিবেগ গণ্টায় ৬০ কিমি। বহরমপুর থেকে মালদহ যাওয়া একটি যাত্রী বোঝাই পুরনো বাসের গতিবেগ ছিল ৮৪ কিলোমিটার। বাসটিতে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। ওই বাসের সব যাত্রীকে অন্য বাসে তুলে দিয়ে ওই বাসটিকে আটক করে রাখা হয়েছে।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হিসেবে, গত চার বছরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বহরমপুর থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ৫২৪টি দুর্ঘটনার মধ্যে ২৮২টি দুর্ঘটনার কারণ যানের মাত্রাতিরিক্ত গতি।
আটক গাড়িগুলির মধ্যে রয়েছে মহেশাইল ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি মাতৃযানও। ন’দিনের এক সদ্যজাতকে নিয়ে গাড়িতে ফিরছিলেন মহেশাইলের পারুল দাস। পুলিশের হিসেবে গাড়িটি চলছিল ৮০ কিলোমিটার বেগে। ওষুধ ডেলিভারি দিয়ে সাগরদিঘির ন’পাড়া থেকে ফিরছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাম্বুলেন্স। সেটিও ছুটছিল ৮৪ কিলোমিটার গতিতে।