নেমপ্লেটের ‘ভাইস’ মুছে স্বপ্ন অধরাই

 সোমবার ডোমকলে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনে তাঁর নামই ওঠেনি। অথচ সৌমিক হোসেনের ‘অপসরনে’র পরে নিজের গাড়ির কাচে, ভাইস চেয়ারম্য়ানের ‘ভাইস’টা নিজেই ছেঁটে ফেলেছিলেন তিনি।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

শেষতক হাতে রইল পেন্সিল!

Advertisement

অভিমানটা স্বাভাবিক, সঙ্গে মিশে থাকছে খানিক বিস্ময়, ক্ষোভও।

বলছেন, ‘‘এত দিন ধরে সবাইকে বেঁধে রাখলাম। আপ্রাণ লড়াই করলাম, এই তার পুরস্কার!’’

Advertisement

সোমবার ডোমকলে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনে তাঁর নামই ওঠেনি। অথচ সৌমিক হোসেনের ‘অপসরনে’র পরে নিজের গাড়ির কাচে, ভাইস চেয়ারম্য়ানের ‘ভাইস’টা নিজেই ছেঁটে ফেলেছিলেন তিনি। ভেবেই নিয়েছিলন, নিছক সময়ের অপেক্ষা, পুরপ্রধান হচ্ছেন তিনিই।

মঙ্গলবার তাই অকপটেই দলের শীর্য নেতাদের দিকে আঙুল তুলে ফেললেন প্রদীপ চাকী।

কিন্তু কেন এমনটা ঘটল তা নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটাচ্ছেন তৃণমূলেরই এক জেলা নেতা। বলছেন, ‘‘এটাই তো হওয়ার ছিল। প্রদীপ যে তলায় তলায় ফের দল ভেঙে সৌমিকের দিকে ঝুঁকে যেতে পারেন তা আগেই অনুমান করেছিলেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক (শুভেন্দু অধিকারী)। আর তাই সামনে গাজর ঝুলিয়ে কাজ হাসিল করে নিঃশব্দে প্রদীপকে ছেঁটে ফেলা হল।’’

কংগ্রেসের কার্যালয়ে কান পাতলেও শোনা যাচ্ছে, প্রদীপ চাকীকে ‘বলির পাঁঠা’ করা হল। তাঁকে সামনে রেখেই গড়ে তোলা হয়েছিল আন্দোলন। কারণ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব খুব ভাল করেই বুঝেছিলেন এই আন্দোলনের মধ্যে প্রদীপকে না রাখতে পারলে গোটা প্রক্রিয়া মাঝ পথেই ভেস্তে যেতে পারে। এমনকি সৌমিকের সঙ্গে ভেতরে ভেতরে যোগাযোগ করে আবারও দল ভাঙার কাজ করবেন তিনি। আর সেই অনুমান থেকেই ঝুঁকি না নিয়ে প্রদীপকে পুর প্রধানের পদে বসানো হল না।

ডোমকলের এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘জেনে রাখুন, প্রদীপ চাকী কখনোওই পুরপ্রধানের দৌড়ে ছিলেন না। কেবলমাত্র সৌমিক এর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন যাতে থমকে না যায় সে লক্ষ্যেই তাঁর সামনে পুরপ্রধানের টোপ রাখা হয়েছিল।’’

প্রদীপ অবশ্য এ দিনও বিশ্বাস করতে পারছেন না ‘দাদা’ শুভেন্দু অধিকারী এ কাজ করতে পারেন!

তাঁর দাবি, ‘‘সোমবার সকালেও দাদা বলেছিলেন ডোমকলের ভাইস চেয়ারম্যান হবেন চেয়ারম্যান।’ আমার মনে হচ্ছে খুব কম সময়ের মধ্যে দাদার কান ভাঙানো হয়েছে। আর এই কান ভাঙিয়েছে জেলার কিছু নেতা।’’

জেলা পুলিশের একাংশের দাবি প্রদীপ আসলে রাজনীতির মাঠে টাট্টু ঘোড়া। ওর লাগাম ধরাটা বড্ড কঠিন, পুরপ্রধান হলে তার লাগাম টানা তৃণমূলের পক্ষে যেমন কঠিন হত, তেমনই পুলিশের কাছেও ছিল

কঠিন চ্যালেঞ্জ।

আর সেই চ্যালেঞ্জ দুরে রাখতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিক দলের অনুগত, বিশেষ করে জেলা পর্যবেক্ষকের অন্যতম কাছের লোক জাফিকুল ইসলামকে পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন