বল বাড়াব, না গরু তাড়াব!

এ দিকে, ক্লাস শেষে পড়ুয়ারা বেরিয়ে এসে বাইরে বেরোনোর পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। ‘সর, সর’ বলেও রক্ষা নেই। কাছাকাছি গেলে আবার কখনও কখনও শিং উঁচিয়ে ফোঁস করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০১:১২
Share:

অবাধে। নিজস্ব চিত্র

গরু নিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা!

Advertisement

কখনও তারা দলবেঁধে ভিড় করছে বাংলা বিভাগের সামনে। সেখানে বেশিক্ষণ ভাল না লাগলে তারা একটু জিরিয়ে নিচ্ছে ইতিহাস বিভাগের সামনে।

এ দিকে, ক্লাস শেষে পড়ুয়ারা বেরিয়ে এসে বাইরে বেরোনোর পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। ‘সর, সর’ বলেও রক্ষা নেই। কাছাকাছি গেলে আবার কখনও কখনও শিং উঁচিয়ে ফোঁস করছে।

Advertisement

ক্লাস শেষে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মাঠে খেলতে যান। কিন্তু সেখানেও মাঝেমধ্যেই খেলোয়াড়দের থেকে গরুর সংখ্যা বেশি হয়ে যায়। খেলোয়াড়দের এক জন বলছেন, ‘‘কী বিপদ, বলুন তো? ফুটবল মাঠে এত গরু ঢুকে পড়লে কি আর খেলা হয়! গরু তাড়াব না বল বাড়াব?’’

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভবন থেকে আর এক ভবন বেশ কিছুটা দূরে। ভিতরেও রয়েছে অফুরন্ত ফাঁকা জায়গা, একাধিক মাঠ। অথচ এত বড় চত্বরে নেই কোনও সীমানা প্রাচীর। তাই অবাধে আশপাশের এলাকার লোকজন ঢুকে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে। চাঁদামারি-সহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকার লোকজন কল্যাণী শহরে আসার জন্য দূরত্ব কমানোর জন্য ব্যবহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দি। এ সব তো আছেই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গরু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বহু লোকের পেশা গো-পালন। অভিযোগ, তাঁদের অনেকেরই গরু এখন ঢুকে পড়ছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। আর ছাড়া গরু অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ মাঠ থেকে ও মাঠ। মাঝেমধ্যেই মাঠ ভাল না লাগলে চলে আসছে বিভিন্ন বিভাগের সামনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানাচ্ছেন, দিন কয়েক আগের এক দুপুরে আচমকা গোটা দশেক গরু এসে ভিড় করে বাংলা বিভাগের সামনে। অনেক কসরত করে সে যাত্রা গরু তাড়িয়ে পড়ুয়ারা বাইরে বোরোয়। দিন কয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন একাধিক চা ও খাবারের দোকানের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল বেশ কিছু গরু। গরুর সামনে যেতেই ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রকে শিং দিয়ে গুঁতিয়ে দিয়েছে এক গরু।

এ ছাড়াও সোশ্যাল সায়েন্স ব্লক কিংবা চায়ের দোকানের সামনে তো গরুর ছড়াছড়ি। শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক মহিলা জানালেন, তাঁর দুটো গরু আছে। বেলার দিকে তিনি তাদের ছেড়ে দিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। আর সন্ধ্যার পরে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। তাঁকে খড় কিনতে হয় না। একেবারে নিখরচায় সবুজ ঘাস খেয়ে দিব্যি বড় হচ্ছে গরু দু’টি। এ দিকে, তার খেসারত দিতে হচ্ছে পড়ুয়াদের।

মাস কয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর না থাকার কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে এ দিন শঙ্করবাবুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন