নাটক ‘রক্তকরবী’। —নিজস্ব চিত্র।
টেলিভিশনের পর্দায় দিনভর গুচ্ছের একঘেয়ে সিরিয়াল আর মনকে টানে না। না না করে শীতও হাজির। এ দিকে, বাড়ির কাছে শুরু হয়েছে সারা বাংলা নাট্যোৎসব।
স্বাদ বদলের আশায় তাই সন্ধে নামলে গায়ে চাদর মুড়ি দিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন মেয়েরা। গুটি গুটি পায়ে হাজির হচ্ছেন নাটকের আসরে।
মঞ্চে রঙিন আলোর কেরামতি আর ‘মুদ্রারাক্ষস’, ‘আত্মকথন’, ‘গওহরজান’-এর সংলাপে মন বিভোর। আর দর্শকাসনে এমন ভিড় দেখে মুখে হাসি উদ্যোক্তাদেরও।
গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে কান্দির হ্যালিফক্স ময়দানে ‘ঝড়’ নাট্যগোষ্ঠীর পরিচালনায় সাতদিনের সারা বাংলা নাট্যোৎসব শুরু হয়েছে। প্রথম দিন তেমন ভিড় না হলেও দিন যত যাচ্ছে নাটক দেখতে ভিড় জমেছে। দর্শকদের সিংহভাগই মেয়েরা।
নোট বাতিলের জেরে বিজ্ঞাপন দিতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে সাহায্য চেয়েও তেমন সাড়া মেলেনি। ফলে নাট্যোৎসবের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু দীর্ঘ ঐতিহ্যে ছেদ পড়ুক চাননি তাঁরা। শেষে সংস্থার ফান্ড ভাঙিয়ে শুরু হয় নাট্যোৎসব।
গত মঙ্গলবার নাটক দেখতে এসেছিলেন কান্দির বিজয়নগরের বাসিন্দা টিঙ্কু দাস। তিনি বলেন, “শীতের সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরের ঠান্ডাটা বেশ লাগে। তা ছাড়া নাটকের আসর তো সারা বছর হয় না। বাইরে থেকে বহু শিল্পী নাটক করতে শহরে আসছেন। তাই নাটক দেখতে চলে এসেছি।’’ আরও এক দর্শক শ্রাবণী ঘোষ বলেন, “এমনিতে বাড়ি থেকে বাইরে বেরনো হয় না। তাই বিকেলের মধ্যে ছেলের পড়াশোনা সেরে নাটক দেখতে চলে আসি।’’
আয়োজক নাট্য গোষ্ঠীর সম্পাদক পঞ্চানন দাস বলেন, ‘‘উৎসব চালাতে বেশ খরচ। তারপরেও যদি দর্শক না হয় সব আয়োজন বৃথা।’’
তিনি জানান, তবে এ বার পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েরাও যে নাটক দেখতে আসরে হাজির হচ্ছেন, এটাই তাঁদের সেরা প্রাপ্তি।