Indian Railways

ভারত-বাংলাদেশ ট্রেনে নিরাপত্তার দায়িত্বে আরপিএফ

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত করা মৈত্রী, বন্ধন ও মিতালী এক্সপ্রেসের নিরাপত্তার দায়িত্বে এই রদবদল নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠাও শুরু করেছে।

Advertisement

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৬
Share:

বিদায় সংবর্ধনা। গেদে স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী আন্তর্জাতিক ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে আর দেখা যাবে না সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানদের। পরিবর্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব পাচ্ছে রেল নিরাপত্তা বাহিনীর রক্ষীরা (আরপিএফ)।

Advertisement

গত ১ মার্চ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত করা মৈত্রী, বন্ধন ও মিতালী এক্সপ্রেসের নিরাপত্তার দায়িত্বে এই রদবদল নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠাও শুরু করেছে। কেন এই দায়িত্ব হস্তান্তর সে বিষয়ে রেল হা বিএসএফের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোনও বক্তব্য মেলেনি।

পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করে। শুরুর দিকে প্রথম তিন বছর ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ১২০ কিলোমিটার যাত্রাপথে ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল রেলের হাতে। ২০১১-১২ সাল নাগাদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে ওই আন্তর্জাতিক ট্রেনের যাত্রী নিরাপত্তার দায়িত্বভার নেয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এক যুগ পার করে এ বার সেই দায়িত্বই ফিরিয়ে দেওয়া হল রেল রক্ষী বাহিনীর হাতে।

Advertisement

শুধু মৈত্রী এক্সপ্রেস নয়, কলকাতা রেল স্টেশন থেকে বনগাঁ হয়ে খুলনা চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস ও নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে হলদিবাড়ি হয়ে ঢাকা যাওয়ার মিতালী এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রেও যাত্রী নিরাপত্তার দায়িত্বে একই রদবদল হয়েছে। গত ৩১ মার্চ গেদে আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আউট পোস্ট থেকে বিএসএফ জওয়ানদের বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়।

কেন এমন সিদ্ধান্ত? পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণই প্রশাসনিক বিষয়।’’ আর বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অমরিশ কুমার আর্যের কথায়, ‘‘আমরা নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাতে পারছিলাম না বলে নিরাপত্তার দায়িত্ব রেলরক্ষী বাহিনী নিয়েছে, এমনটা ভাবা একেবারেই ঠিক হবে না।’’

তাঁর কথায়, ‘‘রেলের যাত্রী নিরাপত্তার দায়িত্ব রেল রক্ষী বাহিনীরই নেওয়ার কথা। আমাদের বাড়তি যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাই আমরা পালন করছিলাম। কিন্তু বিএসএফের দায়িত্ব শুধু সীমান্তের নির্দিষ্ট এলাকাতেই থাকে।’’

রেল সূত্রে খবর, এত দিন কলকাতা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করা মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস গেদে এবং বনগাঁ সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত এবং উল্টো পথে কলকাতায় পৌঁছানো পর্যন্ত যাবতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাত বিএসএফ। ট্রেন সীমান্ত স্টেশনে পৌঁছানোর পর সেখানে ট্রেনের যাত্রীদের তল্লাশির পর পাওয়া যেত দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচলের সবুজ সঙ্কেত। তাতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হত। ফলে ঝামেলা এড়াতে ওই আন্তর্জাতিক ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কমতে শুরু করেছিল। এ বার নিরাপত্তায় সেই কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার সীমান্ত নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যে এই রদবদলের পিছনে অন্য কারণ থাকতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি অনুপ্রবেশের উদ্দেশ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেসের চাকার পাশে থাকা ট্রাঙ্কে শুয়ে কলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গেদে পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন এক কাশ্মীরি যুবক। তাঁকে গেদে রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রশ্ন ওঠে কলকাতা স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে। আন্তর্জাতিক ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্ব রদবদলের ফল তাই ভাল হবে নাকি খারাপ, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না বলে অনেকের মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন