চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুর করা হল রানাঘাট মহকুমার হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে ঘটনার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শষুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টে নাগাদ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল রানাঘাট শহরের রথতলার বাসিন্দা, মাঝবয়সী টোটো চালক আনন্দ সরকারকে। পরিবার পরিজনদের অভিযোগ, চিকিৎসা না করে তাঁকে ফেলে রাখা হয়। বারবার চিকিৎসককে ডাকার কথা বললেও নার্সেরা তা কানে তোলেননি। এর মধ্যেই আশপাশের এলাকা পরিচিত লোকজন ছুটে আসেন। হইচই শুরু হয়ে যায়। নার্সের ঘরের সামনে রাখা ওষুধ কে বা কারা ছুড়ে ফেলে দেয়। চেয়ার ভাঙা হয়। খবর পেয়ে রানাঘাট থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আনন্দবাবুর ছেলে আশিসের অভিযোগ, ‘‘আমরা বাবাকে চিকিৎসা না করে ওয়ার্ডে ফেলে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসককে ডাকার জন্য বারবার নার্সদের বলা হয়েছে। অবস্থা আরও খারাপ হলে নার্সদেরই ওষুধ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু, তাঁরা কিছুই করতে রাজি হননি। তাঁরা শুধু বলেন, ‘আমরা কিছু করতে পারব না। ডাক্তার ডাকা হয়েছে।’ অনেক পরে, বাবা যখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তখন এক ডাক্তার আসেন। এর কিছু ক্ষণ পরে বাবাকে কল্যাণী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।“
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শ্যামল কুমার পোড়ে অবশ্য বলেন, ‘‘ওই রোগীর হার্টে ব্লক ছিল। হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সেরা দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজ করেছেন।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রোগীর সঙ্গের লোকজন আমাদের কোনও কথাই মানতে চাইছিলেন না। পরে তাঁরা ভাঙচুরও করেন। বেশ কিছু মূল্যবান ওষুধ ও ইঞ্জেকশন নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কয়েক জন কর্মীকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে।“
আনন্দবাবুকে কল্যাণী গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, রোগীর পরিবারের লোকেরা কোনও রকম অভিযোগ জানাননি। কী ঘটেছিল জানতে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে।