ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদে রেশনের চালে নোংরা পাওয়া গিয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় গ্রাহকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ডিলারদের।
এ বার নদিয়াতেও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রেশন ডিলারেরা। কেননা যে চাল তাঁদের হাতে এসেছে, তার মান মোটেই ভাল নয়। কাল, বুধবার থেকে তা বিলি হওয়ার কথা। ফলে, সে দিন থেকে তাঁদের সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ডিলারদের একাংশ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের নদিয়া জেলা সম্পাদক ইতিমধ্যেই জেলার খাদ্য নিয়ামককে চিঠি দিয়ে নিম্নমানের চাল আসার কথা জানিয়েছেন। সংগঠনের সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, “নিম্নমানের চাল নিয়ে খাদ্য দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। ওরা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।”
মুর্শিদাবাদেও গত তিন-চার সপ্তাহ ধরে রেশনে খারাপ চাল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। চালে নোংরা থাকায় তা বিলি করতে গিয়েও কিছু এলাকায় মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ডিলারদের। এই সপ্তাহের রেশন সামগ্রী আজ, মঙ্গলবার থেকে তোলা হবে। ফলে, এ বার কেমন চাল এসেছে তা আজই বোঝা যাবে। জেলা খাদ্য নিয়ামক অরবিন্দ সরকার অবশ্য দাবি করেন, “আমাদের জেলায় রেশনের চালের মান ভালই রয়েছে। চাল বিলি নিয়ে এই জেলায় কোনও সমস্যা নেই।”
ডিলারেরা অবশ্য পুরোপুরি অন্য কথা বলছেন। রাজ্যের এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, লালগোলার বাসিন্দা সরিৎকুমার চৌধুরী বলছেন, “দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে গত তিন-চার সপ্তাহের চাল মুর্শিদাবাদ জেলায় এসেছে। ওই চালে নোংরা ছিল। কিছু এলাকায় তা বিলি করতে সমস্যা হয়েছে।’’ জলঙ্গির এক ডিলারও বলেন, “কয়েক সপ্তাহ থেকেই নিম্নমানের চাল আসছে। খাদ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়ে লাভ হচ্ছে না। অথচ গ্রহকদের মুখোমুখি হয়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে আমাদেরই।”
নদিয়াতেও গোলমাল বাধল বলে!
করিমপুর থেকে শুরু করে তেহট্ট, চাপড়া, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, রানাঘাট — এ সপ্তাহে জেলার অধিকাংশ এলাকায় ডিলারদের কাছে নিম্নমানের চাল গিয়েছে। ভাঙা চাল তো আছেই, কালো চালও রয়েছে। কৃষ্ণনগরের এক ডিলারের দাবি, কিছু কিছু বস্তায় এমন খারাপ চাল রয়েছে যা মানুষের খাওয়ার যোগ্য নয়।
কৃষ্ণনগর হোলসেল কনজিউমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড থেকে কৃষ্ণনগর থানা এলাকার ৫৪ জন রেশন ডিলার রেশনের সামগ্রী নেন। ৩২ জন ইতিমধ্যে রেশনের মাল তুলেছেন। ডিলারদের একাংশের অভিযোগ, মালদহ থেকে ওই সমবায়ে অত্যন্ত খারাপ মানের চাল এসেছে। সমবায়ের ম্যানেজার বিজন মজুমদারও বলেন, “খাদ্য দফতরের নির্দেশ মতো আমরা এ বার মালদহ থেকে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে পাওয়া চাল এনেছি। তার মান খুবই খারাপ। জেলা খাদ্য নিয়ামককে নমুনা পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি।”
নাজিরপুরের রেশন ডিলার প্রশান্ত সরকার কিংবা চাপড়ার ডোমপুকুরের রেশন ডিলার বক্সার আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘যা চাল পেয়েছি, তা বিলি করতে গিয়ে কী ঝামেলায় পড়ব, কে জানে!’’ খাদ্য নিয়ামক অসীমকুমার নন্দী বলেন, “নিম্নমানের চাল এসেছে বলে রেশন ডিলাররা যে অভিযোগ করেছেন, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।”