Onion

লাফিয়ে উঠছে পেঁয়াজের দর

কয়েক সপ্তাহে ২০ টাকা থেকে অস্বাভাবিক রকম বেড়ে খুচরো বাজারে কেজি পিছু পেঁয়াজের দাম পৌঁছে গিয়েছে ৭০-৮০ টাকায়।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০২:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাজারে গিয়ে দু’কেজি পেঁয়াজ কিনে দোকানির দিকে একশো টাকার নোট বাড়িয়ে ফেরতের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন নবদ্বীপের আশিস রায়। তাঁকে চমকে দিয়ে দোকানি আরও চল্লিশ টাকা চাইতে হতবাক তিনি। তাঁকে চমকাতে দেখে দোকানি বলেন, “এক সঙ্গে দু’কেজি নিচ্ছেন বলে ৭০ টাকা করে নিলাম। না হলে ৮০ টাকা কেজি যাচ্ছে।”

Advertisement

উৎসবের মরশুমে চড়া দামের ঝাঁঝে এভাবেই ক্রেতার চোখে জল আনছে পেঁয়াজ। কয়েক সপ্তাহে ২০ টাকা থেকে অস্বাভাবিক রকম বেড়ে খুচরো বাজারে কেজি পিছু পেঁয়াজের দাম পৌঁছে গিয়েছে ৭০-৮০ টাকায়। আশিস ভ্যাবাচাকা খাওয়ার ঘটনা মঙ্গলবারের। বুধবার সকালে খুচরো বিক্রেতা শিরোমণি দাস বর্মণ বলেন, “আজ অবধি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৭০ টাকা কেজি দরে। কেননা এটা দু’দিন আগে কেনা। কিন্তু আজ পাইকারি বাজারেই ৭০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হছে পেঁয়াজ। সুতরাং পরের দিন আর এ দামে বিক্রি করতে পারব না। এখন দাম চড়তেই থাকবে।”

পুজোয় পেঁয়াজের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে কপালে আশঙ্কার ভাঁজ গৃহস্থ থেকে ব্যবসায়ী, হোটেল থেকে রেস্তরাঁ মালিক সকলের। কিন্তু কেন এই অবস্থা পেঁয়াজের? কৃষি বিশেষজ্ঞ পার্থ ঘোষ দু’টি বিষয়কে এর জন্য দায়ী করছেন। প্রথমত, আমাদের রাজ্যে বছরে এক বার মাত্র পেঁয়াজ চাষ হয়। নভেম্বরে বোনা পেঁয়াজ মাঠ থেকে ওঠে ফেব্রুয়ারিতে। সেই পেঁয়াজ রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে গস্ট নাগাদ ফুরিয়ে যায়। তখন পেঁয়াজের জন্য আমাদের প্রধান ভরসা মহারাষ্ট্র, বিশেষ করে নাশিক। দ্বিতীয়ত, আমাদের রাজ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোনও সংগঠিত ব্যবস্থা নেই। চাষিরা নিজের মতো করে নিজেদের বাড়িতে কিছু পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। প্রতি বছরই এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। কিন্তু এই পুজোর সময়ে ভোজের আয়োজন বেশি। তাই পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়, অথচ জোগান গিয়েছে কমে। তাতেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

Advertisement

ব্যবসায়ীরাও জানাচ্ছেন, রাজ্যের পেঁয়াজের কারবার মূলত নাশিকের উপরেই নির্ভরশীল। এ ছাড়া বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেও পেঁয়াজ আসে। কৃষ্ণনগরের ব্যবসায়ী রমেন সেন বলছেন, “ভিন্ রাজ্যে পেঁয়াজ উৎপাদক অঞ্চল বন্যায় ভেসে গিয়ে বিপুল ক্ষতি হয়েছে। আজকে যা খবর পেয়েছি, তাতে নাশিকেই পাইকারি পেঁয়াজের দর ৭২ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজ আনতে খরচ আরও সাত-আট টাকা। তার উপর ব্যবসায়ীদের কিছু লাভ। সব মিলিয়ে পেঁয়াজের দাম যে আরও বাড়তে চলেছে, তা স্পষ্ট।”

মাটন-চিকেন কোর্মা-কালিয়া নয়, নিরামিষ ভোগের খিচুড়িতেই না-হয় এখন মন দিক বাঙালি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন