গ্রাহক সেজে ব্যাঙ্কে ঢুকে ম্যানেজারকে মারধর করে প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা লুঠ করে চম্পট দল একদল ডাকাত। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কল্যাণীর ঘোষপাড়া রোডের উপর এক রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। যাওয়ার সময় ব্যাঙ্কের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তালা ভেঙে গ্রাহক ও ব্যাঙ্ক কর্মীদের উদ্ধার করে। তবে ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ব্যাঙ্ক খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওই ডাকাতদলটি গ্রাহক সেজে ব্যাঙ্কে ঢুকে স্বমূর্তি ধারণ করে। প্রথমে ম্যানেজারের ঘরে গিয়ে ভল্টের চাবি চায়। ম্যানেজার দয়ানন্দপ্রসাদ সাউ তা দিতে অসম্মত হলে তাঁকে চড় মারে। গ্রাহকদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাঁদের মাথা নিচু করে থাকতে বলা হয়। কয়েকজন গ্রাহককে মারধরও করে তারা। পরে ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ভল্ট খুলে প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা হাতায়। মিনিট পনেরোর মধ্যে অপারেশন শেষ করে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেয় সশস্ত্র ডাকাত বাহিনী। দয়ানন্দবাবু বলেন, ‘ডাকাতরা সশস্ত্র অবস্থায় এসেছিল। প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে তারা। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।’’
ব্যাঙ্কের গ্রাহক প্রদীপকুমার দাস বলেন, ‘‘১০টা নাদাগ ব্যাঙ্কে ঢুকে দেখি কয়েকজন গ্রাহক মাথা নিচু করে বসে রয়েছেন। কেন তা বোঝার আগেই আমাকেও দু’জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মাথা নিচু করে বসতে বলে।’’ আরও এক গ্রাহক ধনঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘বাইরে থেকে বোঝার উপায় ছিল না ভেতরে কী হচ্ছে। কাছে গিয়ে দেখি দরজার তালা ঝুলছে। ভেতরের লোকজন ভয়ে কাঁপছেন।’’
মঙ্গলবার পুরভোটের ফল প্রকাশের দিন ছিল। ঘটনাস্থল থেকে অদূরে ছিল ভোট গণনাকেন্দ্র। স্থানীয় বাসিন্দাদের নজর ছিল সেই দিকেই। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে এদিনই ব্যাঙ্ক ডাকাতির ছক কষে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘এর আগে ব্যাঙ্কের সামনে বহু গ্রাহকের সাইকেল চুরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, কখনও ডাকাতি হয়েছে বলে শুনিনি। এ দিন পুলিশ যেতে দেখে সন্দেহ হয়। পিছু পিছু গিয়ে ডাকাতির কথা জানতে পারি।’’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তবে ব্যাঙ্কের ম্যনেজার, কর্মী এবং গ্রাহকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’