কাজে বাধা পুরপ্রধানের, অবরোধে বসল পড়ুয়ারা

বেলডাঙা পুরসভা এলাকার রেলষ্টেশন লাগোয়া বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল পাঠভবন। অভিযোগ বেলডাঙার ষ্টেশন রোডের ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে রাস্তাটির প্রায় ১০০ মিটার বেহাল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

এই রাস্তা ঘিরেই সমস্যা। সোমবার বেলডাঙায়। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক

বৃষ্টি হলেই জল-কাদায় মাখামাখি হয়ে যেত রাস্তা। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাই মেরামতির আবেদন করেছিল পুরসভার কাছে। তবে বছর ঘুরে গেলেও সাড়া মেলেনি।

Advertisement

তাই স্থানীয় বিধায়ক কংগ্রেসের মহম্মদ সফিউজ্জমান এবং সাংসদ অধীর চৌধুরীর দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুলের কর্তারা। সাড়া মিলেছিল দ্রুত। শুরু হয়ে গিয়েছিল সংস্কারের কাজও।

কিন্তু রাজনীতির থাবায় থমকে গিয়েছিল সেই কাজ। আর তাতেই ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা এ দিন অবরোধ করে বসে সড়ক। তাদের তুমুল প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত অবশ্য পিছু হটে ‘রাজনীতি’, ফের শুরু হয় রাস্তা মেরামতির কাজ। বেলডাঙা পুরসভা এলাকার রেলষ্টেশন লাগোয়া বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল পাঠভবন। অভিযোগ বেলডাঙার ষ্টেশন রোডের ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে রাস্তাটির প্রায় ১০০ মিটার বেহাল। বৃষ্টি হলেই হাঁটু জল বাঁধা। তাতে স্কুলের ৪৫০ জন ছাত্রছাত্রী এবং ৩৩ জন শিক্ষিকা যাতায়াতেই করতে পারেন না। বন্ধ রাখতে হয় স্কুল।

Advertisement

ওই রাস্তায় এসবিআই-এর শাখা রয়েছে, রয়েছে বহু গৃহস্থ বাড়ি। গুরুত্বপূর্ণ সেই রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে স্কুল বারবার বেলডাঙা পুরসভাকে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু পুরসভা কোন গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। মাস খানেক আগে তাওই বেলডাঙার কংগ্রেস বিধায়ক সফিউজ্জামানকে অনুরোধ করেন তাঁরা। পরে সফিউজ্জামান বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর সাংসদ কোটার ৪ লক্ষ টাকায় রাস্তা তৈরির অনুমতি পায়। টেন্ডার ডেকে বেলডাঙা ১ ব্লক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ও পুরসভাকে সেই কপি জমা দিয়ে সোমবার সকাল থেকে কাজ শুরু হয়।

খবর পেয়ে পুরপ্রধান তৃণমূলের ভরত ঝাওর এলাকায় এসে রাস্তার কাজ বন্ধ করতে বলেন বলে অভিযোগ স্কুলের। কাজ কিছু সময়ের জন্য বন্ধও হয়ে যায়। কিন্তু স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষিকারা ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভ শুরু করে। স্কু‌লের ছাত্ররা রাস্তায় বসে পরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ফলে বেলডাঙা ষ্টেশন যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। গাড়ি ও টোটো আটকে পরে। পরে সমবেত প্রতিবাদের মুখে পুরপ্রধান ভরত ঝাওর ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দিলসাদ বানু বলেন, ‘‘স্কুলের প্রায় ৪৫০ ছাত্রছাত্রী ও ৩৩ জন শিক্ষিকাকে নিয়ে সমস্যায় ছিলাম। পুরসভাকে বলেছি কাজ হয়নি। পরে সাংসদ কোটার টাকায় সব নিয়ম মেনে রাস্তা তৈরি হচ্ছিল। পুরপ্রধান এসে বাধা দেন। পরে আমাদের ছাত্ররা রাস্তায় নেমে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করলে পুরপ্রধান ফিরে যান।’’

বিধায়ক সফিউজ্জামান বলেন, ‘‘পুরসভা ভবনের লাগোয়া এই স্কুল। সঙ্গে দুটি ব্যাঙ্কের এটিএম যেতে এই রাস্তা পার হতে হয়। কিন্তু পুরসভা এই রাস্তা তৈরি করার প্রয়োজন মনে হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে সাংসদ কোটার টাকায় এই রাস্তা তৈরি হচ্ছে। পুরপ্রধান সেই কাজে নিজে এসে বাধা দেন। তিনি মুখে উন্নয়নের কথা বলছেন। কিন্তু উন্নয়নের সময় তার বিরোধীতা করতে মাঠে নেমেছেন।’’

পুরপ্রধান ভারত ঝাওর বলেন, ‘‘আইন আনুযায়ী এলাকার প্রকাশ্যে কোন স্থানে রাস্তা ও ড্রেন করতে গেলে পরসভার সঙ্গে আলোচনা করে করতে হয়। ওরা আমাদের সঙ্গে কোন আলোচনা করেনি। তাই নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন