রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোরঞ্জন দাস। নিজস্ব চিত্র
ঘরের মধ্যে খাটের উপরে এক দম্পতিকে বেহুঁশ অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকেরা। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ধানতলা থানার উত্তরপাড়া হালালপুর এলাকায়। তাঁদের নাম মনোরঞ্জন দাস এবং আরতি দাস। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁদেরকে প্রথমে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আরতি দাসকে কলকাতার নীলরতন সরকার মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পুলিশ জানাচ্ছে, ওই বাড়িতে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন। এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি।
এ দিকে, বাবা-মায়ের অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে শান্তিপুর থেকে ওই দম্পতির বড় মেয়ে পূর্ণিমা অধিকারী এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাঁকিনাড়া থেকে ছোট মেয়ে ব্রজেশ্বরী অধিকারী ছুটে এসেছেন।
এ দিন ব্রজেশ্বরী বলেন, “বাবা-মা এখনও অসুস্থ। তাই ওদের সঙ্গে সে ভাবে কথা বলা যাচ্ছে না। সে কারণে প্রকৃত ঘটনা এখনও আমরা জানতে পারিনি।’’ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দম্পতিকে উদ্ধার করার সময় থেকে আরতির হাতের এবং কানের সোনার গয়না পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতির ঘরের সব জিনিসপত্র লন্ডভন্ড অবস্থায় ছিল। আরতি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঠিক কী কী কী খোওয়া গিয়েছে, তা বোঝা সম্ভব নয় বলে ছোট মেয়ের দাবি। তাই মা-বাবা সুস্থ হলে ওই পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।
রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের রঘুনাথপুর হিজুলি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উররপাড়া হালালপুরে ওই অসুস্থ দম্পতির বাড়ি। তাঁদের দুই মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বাড়িতে পুরনো দিনের রাধাগোবিন্দের মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরে নিয়মিত পুজো দেন মনোরঞ্জন দাস এবং আরতি দাস। অন্য দিনের মতো রবিবার রাতে তাঁরা ঘুমোতে যান। এ দিন সকালে তাঁদের ঘরের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পায় বাড়ির লোকেরা। কিন্তু তাঁদের দু’জনকেই দীর্ঘ ক্ষণ ঘুম থেকে উঠতে দেখা যায়নি। পরে ভাইপোরা তাঁদের ডাকাডাকি শুরু করে। তার পরেও তাঁদের সাড়া মেলায় ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখা যায়, ওই দম্পতি বেহুঁশ অবস্থায় বিছানার উপরে পড়ে রয়েছেন। তখনই দ্রুত তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই বাড়িতে শিষ্য-শিষ্যারা মাঝে মধ্যেই আসতেন। সে দিনও বাড়িতে এক জন মহিলাকে আসতে দেখা গিয়েছিল। তিনি রাতে ওই বাড়িতেই শুয়েছিলেন বলে স্থানীয়দের দাবি। অথচ, পরের দিন তাঁকে আর দেখা যায়নি। যদিও পরিবার সূত্রে এ খবরের কোনও সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।