সরকারি হোম থেকে পালিয়ে যাওয়া সাত বাংলাদেশি নাবালকের বুধবার পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। রবিবার গভীর রাতে বহরমপুরের ‘আনন্দ-আশ্রম’ হোমের দোতলার শৌচাগারের জানালার কাচ ভেঙে নীচে নেমে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় ১৫-১৭ বছরের ওই সাত নাবালক। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অপরাধে ধৃত ওই বালকদের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের নির্দেশে সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনে থাকা বহরমপুরের ওই হোমে রাখা হয়। তাদের কারও সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে তিন মাস আগে, কারও বছর খানেক আগে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরেই ওই রাতে অনুপস্থিত এক নৈশপ্রহরীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শো-কজ করা হয়েছে কর্মরত এক নৈশপ্রহরীকে। হোমের ভারপ্রাপ্ত সুপার শোভা গোস্বামীকেও শো-কজের পাশাপাশি হোমের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শোভাদেবী শিলায়ন হোমের সুপার। সেই সঙ্গে কাদাইয়ের কাজি নজরুল ইসলাম আবসিক হোমের অতিরিক্ত দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। আনন্দ-আশ্রম হোমে স্থায়ী কোনও সুপার না থাকায় ওই দায়িত্বভার দেওয়া হয় হরিহরপাড়ার সিডিপিও অশোক মজুমদারকে। কিন্তু অশোকবাবু ব্যক্তিগত কাজে ছুটি নেওয়ায় সাময়িক ভাবে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শোভাদেবীকে।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সমনজিৎ সেনগুপ্ত জানান, ঘটনার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। হোমের অস্থায়ী সুপার পদে যিনি ছিলেন, তাঁকে সরিয়ে সুপার হিসেবে কাজ করার জন্য জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তও হবে।
আনন্দ-আশ্রম নামের ওই সরকারি হোমের দোতলার একটি হলঘরে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন মিলিয়ে ১৭ জন নাবালক আবাসিক ছিল। তাদের মধ্যে ওই সাত জন বাংলাদেশি ওই রাতে পালিয়ে যায়। হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌচাগারের জানালার কাচ ভেঙে, গামছার সাহায্যে উপর থেকে নীচে নেমে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় তারা। সোমবার বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হোম কর্তৃপক্ষ। তবে ওই হোম থেকে বাংলাদেশি নাবালক পালানোর ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ৯ জন বাংলাদেশি নাবালক দোতলার সিঁড়ির তালা ভেঙে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরেই ওই হোমে স্থায়ী সুপার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শূন্য পদে দ্রুত কর্মী নিয়োগ নিয়েও ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।