মুদির গুদামে মিলল বারুদ, ধৃত দোকানি

একশো কেজিরও বেশি বিস্ফোরক-সহ এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রঘুনাথগঞ্জের ওই ব্যবসায়ী, প্রবীর দত্ত এবং তার দোকানের কর্মচারী শুভ হালদারকে মঙ্গলবার ৮ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৮
Share:

আদলতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দোকানি ও কর্মচারীকে। —নিজস্ব চিত্র

একশো কেজিরও বেশি বিস্ফোরক-সহ এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

রঘুনাথগঞ্জের ওই ব্যবসায়ী, প্রবীর দত্ত এবং তার দোকানের কর্মচারী শুভ হালদারকে মঙ্গলবার ৮ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত।

প্রবীর রঘুনাথগঞ্জ শহরেরই বাসিন্দা,শুভ’র বাড়ি বীরভূমের মুরারই থানার জাজিগ্রামে।

Advertisement

এই ঘটনায় তদন্তে নেমে মঙ্গলবার দফায় দফায় সাগরদিঘি ও রঘুনাথগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে ১২৫ কিলো বারুদ উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ২ জনকে, যাদের বাড়ি সুতি থানার নতুন চাঁদরা গ্রামে। পিংলা কান্ডে বোমা বিস্ফোরণে এই নতুন চাঁদরাতেই মারা গিয়েছিসেন দশ জন।

সোমবার দুপুরে সুতি থানা এলাকায় বিস্ফোরক-সহ এক যুবকের গ্রেফতারের সূত্রে রাত্রে পুলিশ প্রবীরের মুদিখানার দোকানে চড়াও হয়। তার গুদাম থেকেই মেলে ড্রাম ও বস্তা বোঝাই ৯৪ কিলোগ্রাম নানা ধরনের বিস্ফোরক।

তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের ৪/৫/৬ নম্বরের একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের মধ্যে ৩৪ কিলো রয়েছে হলুদ রঙয়ের পাউডার, ২০ কিলো সাদা পাউডার ও ৪০ কিলো সিলভার রঙের । ড্রাম বোঝাই রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম পাউডারও। সমস্ত বিস্ফোরকই পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এ গুলি যে বিস্ফোরক তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

জঙ্গিপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত জানান, রঘুনাথগঞ্জ , সুতি ও সাগরদিঘি থানা মিলে এই বিস্ফোরক কান্ডে তদন্ত করছে। চলছে তল্লাশিও। মঙ্গলবারও দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১২৫ কিলো বিস্ফোরক।

পুলিশের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই বিস্ফোরক বেচাকেনার কারবার করছেন প্রবীর। প্রবীর পুলিশের কাছে তা স্বীকারও করেছে। বিভিন্ন জনের কাছে তা বিক্রিও করেছেন। কলকাতার বড়বাজারের এক দোকান থেকে ৩০০টাকা কিলো দরে সেই সব বিস্ফোরক কিনে এনে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করতেন তিনি। ক্রেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল সুতির বিভিন্ন এলাকার। তার কাছ থেকেই পুলিশ একাধিক ক্রেতার নাম পেয়ে মঙ্গলবার দিনভর সুতি, সাগরদিঘি ও রঘুনাথগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক হানা দিতে শুরু করে। সুতির নতুন চাঁদরা থেকে তুলে আনা হয় জিরাত সেখ ও ইশা সেখ নামে দুই সহোদর ভাইকে। এলাকায় বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের বড়সড় কারবারি তারা বলে জানিয়েছে বলে পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তি মত সকালেই শহরের এক ট্রান্সপোর্টের গুদাম থেকে বস্তায় প্রায় ৫০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার করে সাগরদিঘি পুলিশ। দুপুরে রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের রঞ্জিতপুরে হোসেন সেখের বাড়ি থেকে ২৫ কিলো বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। তবে পুলিশ হোসেন সেখকে গ্রেফতার করতে পারেনি। সাগরদিঘির একটি বাড়ি থেকেও মেলে বস্তা বোঝাই ৫০ কিলো বিস্ফোরক।

সুতির গ্রামাঞ্চলে ফের বারুদের কারবার আবার কিভাবে ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে দুদিনে প্রায় ২০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার তারই নজির।

পিংলার বাজি বিস্ফোরণের ঘটনায় সুতির নতুন চাঁদরায় একাধিক কিশোরের মৃত্যুর পর এলাকায় কিছুদিন বন্ধ ছিল বারুদের কারবার । ফের তা ফের মাথা চাড়া দেওয়ার ঘটনা সামনে আসায় এতটাই উদ্বিগ্ন পুলিশ যে স্বয়ং পুলিশ সুপার মুকেশকুমার নিজেই এদিন ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুপুরে সাগরদিঘি থানায় যান।

সুতি ও জঙ্গিপুরে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনা aনতুন কিছু নয়।

গত বছর ৮ অগষ্ট সুতির চাঁদের মোড় থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে ৮১ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার করে পুলিশ । ধৃতদের সকলেরই বাড়ি সুতির বিভিন্ন গ্রামে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন