ভিড়ে ভাসল শান্তিপুর

 নবদ্বীপের যেমন আড়ং, শান্তিপুরের তেমন ভাঙা রাস। আর সেই টানেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তেরা হাজির হন শান্তিপুরের রাজপথে। শান্তিপুরের ভাঙারাস শুধু প্রদর্শনীই নয়, বলা হয় ভক্তির এক অন্য রূপও।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

ভাঙারাসে ভিড়। সোমবার শান্তিপুরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নবদ্বীপের যেমন আড়ং, শান্তিপুরের তেমন ভাঙা রাস। আর সেই টানেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তেরা হাজির হন শান্তিপুরের রাজপথে। শান্তিপুরের ভাঙারাস শুধু প্রদর্শনীই নয়, বলা হয় ভক্তির এক অন্য রূপও।

Advertisement

রাস্তার দু’পাশে হাজার মানুষের ভিড়। অথচ কোথাও কোনও অশান্তি নেই। প্রতি বছরের মতো এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাইরাজা, আলোর মালার মতো একের পর এক মন ভাল করে দেওয়া ট্যাবলোর সঙ্গে পা মেলালেন হাজার হাজার মানুষ।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অদ্বৈতাচার্যের রাস হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। গোস্বামীদের শিষ্য খাঁ চৌধুরি বাড়ি প্রস্তাব দেয়, যুগল মূর্তি শোভাযাত্রা করে দেখানো হোক শহরের লোকজনকে। সেই শুরু। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাঙা রাসে বিগ্রহবাড়ির পাশাপাশি যোগ দিতে শুরু করে বারোয়ারিগুলিও।

Advertisement

অনেকেই মনে করেন, এই ভাঙা রাস আসলে শান্তিপুরের বৈষ্ণব রাসকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার প্রচেষ্টা। পরে তারই রূপ হল রাইরাজা। বড় গোস্বামীবাড়ির বর্তমান বংশধর সত্যনারায়ণ গোস্বামী বলেন, “একটা ঝুলনপূর্ণিমা ও আর একটা রাস ছেড়ে শ্রীকৃষ্ণের চলে যাওয়ার পরে গোপিনীরা রাধাকে এমনই একটা আসনে বসিয়েছিলেন। সেই ধারণা থেকেই রাইরাজার শুরু।”

সত্যনারায়ণ জানান, আসলে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বৈষ্ণবদের দমিয়ে রাখার জন্য নবদ্বীপে রাসের প্রচলন করেন। সেই রাস জনপ্রিয় হল। পিছিয়ে পড়ল শান্তিপুরের রাস। তাই ভক্তদের ফের শান্তিপুরে ফিরেয়ে আনতেই ভাঙারাস ও রাইরাজার প্রচলনল।

বড় গোস্বামী বাড়ির বিগ্রহ দিয়ে শুরু হয় ভাঙা রাস। একে একে অন্যান্য বিগ্রহ বাড়ি ও বারোয়ারিগুলিও শোভাযাত্রা নিয়ে বের হয়। তাদের মধ্যে নতুনপাড়া অভিযাত্রী সঙ্ঘ, ভারতমাতা পুজো কমিটি, বাজপাড়া কমলে কামিনী, কুঠিরপাড়া এবিসিডি ক্লাব, ত্রিকোন পার্ক উল্লেখযোগ্য। কোথাও আলোর রোশনাইয়ে পরীর দেশ তো কোথাও বাহুবলী।

শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে বলেন, ‘‘এ বার রেকর্ড ভিড় হয়েছে।’’ সেই ভিড় সামাল দিতে ছুটে বেড়াতে দেখা গিয়েছে পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়াকেও। এরই মাছে রাস্তার পাশে চেয়ার ভাড়া বাড়তে বাড়তে দু’শো টাকা থেকে চারশো টাকাতেও উঠে যায়। মহিলাদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহারের অভিযোগে একটি বারোয়ারির তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতে পুরনো গণ্ডগোলের জেরে কামারপাড়া বারোয়ারির রাসের মণ্ডপ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে পাশের একটি বারোয়ারির বিরুদ্ধে। বিশৃঙ্খলা বলতে এটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন